বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াল সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন টিম
প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, রাঙামাটির কাপ্তাই এবং লংগদু, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও খাগড়াছড়ির রামগড় বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেছে সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন সংগঠন। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, সাম্প্রতিক সময় ভয়াবহ বন্যায় নোয়াখালী ও ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যার্তদের মধ্যে প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে শুকনা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। রোববার প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী সিরাজুল ইসলামের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক মো. সহিদুল ইসলাম। বিতরণ সময় উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক ব্যবস্থা মো. আ. সাত্তার, চট্টগ্রাম অঞ্চল ব্যবস্থাপক আনোয়ারুজ্জামান, কোস্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাব সভাপতি এএইচ এম মান্নান মুন্না, প্রশিকা কোম্পানীগঞ্জ জেলা এরিয়া ব্যবস্থাপক আবদুল হালিমসহ অন্য কর্মকর্তারা।
কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি জানান, রাঙামাটি রিজিয়নের আওতাধীন কাপ্তাই উপজেলার ১০ আর ই ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা সামগ্রী বিতরণ করেছেন। রোববার জীপতলী ইউনিয়নের দায়িত্বপূর্ণ হাজাছড়া আনসার ক্যাম্প এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সেনাপ্রধানের দিকনির্দেশনায় ১০ আর ই ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ সোহেল পিএসসি সার্বিক তত্ত্ব্বাবধানে এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি জানান, বন্যায় বিপর্যস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত পার্বত্যাঞ্চলের লক্ষাধিক বাসিন্দা। এরই মধ্যে প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চেঙ্গী, মাইনী, কাচালং নদীসহ কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় আশপাশের নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী হাজারও পরিবার। এসব অঞ্চলের বিপণ্ন ভানবাসি মানুষের সাহায্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। পাহাড়ে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রাঙামাটি ২৪ পদাতিক ডিভিশন, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের দীঘিনালার বাঘাইহাট জোন ও লংগদু জোনের আলাদা উদ্যোগে ভানবাসিদের ত্রাণ, চিকিৎসাসেবাসহ সাজেকে আটকেপড়া পর্যটকদের নিরাপদে উদ্ধার করছেন তারা। লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিমেল মিয়া (লংগদু জোন অধিনায়ক), জানান, দেশের ক্রান্তিলগ্নে এবং সব দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা মেহনতী মানুষের পাশে আছে। আমরা পূর্বের ন্যায় উদ্ধার কাজ, ত্রাণ সহায়তা ও চিকিৎসাসেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছি। প্রসঙ্গত, বন্যার্তদের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব পদবির সেনাসদস্যদের এক দিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়েছে।
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, ফটিকছড়িতে হালদা নদী, ধুরুং খালসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে, পানি কমলেও জেলার বন্যাকবলিত এলাকাগুলো দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। সরকারিভাবে আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হলেও অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে সরকারের পাশাপাশি হাইদ চকিয়া দরবার শরিফ ত্রাণ বিতরণ করছে। শনিবার বন্যার্ত শত শত পরিবারকে হাইদ চকিয়া দরবার শরিফের প্রাণপুরুষ পীরে তরিকত আরিফে কামেল শাহ সুফি হাফেজ দৌলত খান (র.)'র একমাত্র শাহাজাদা আলহাজ মোহাম্মদ জাফর উলস্নাহ্ খান দুলালের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন- শাহজাদা রাহাত খান, মাওলানা ওসমান গণী, মাওলানা রিদোয়ান হোসেন, সাংবাদিক মো. জিপন উদ্দিন, নাজমুল তারেক, এনামুল হক চৌধুরী,মো. সাকিব প্রমুখ।
রামগড় (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির রামগড়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রামগড় জোন বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন। জানা যায়, রামগড় জোনের আওতাধীন দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় আকস্মিক সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গরিব ও অসহায় ৩৯৪টি পরিবারের মধ্যে শনিবার ও রোববার দুই দিনব্যপী সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করনে বিজিবির সদস্যরা। রামগড় ব্যটালিয়নের জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল সৈয়দ ইমাম হোসেন জানান, রামগড় জোন (৪৩ বিজিবি) কর্তৃক বন্যাদুর্গত জনসাধারণের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, শুকনো খাবার, বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।