উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় ঢল বন্ধ হওয়ায় হবিগঞ্জে নদনদী ও লোকালয়ের পানি নামতে শুরু করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, লোকালয়ের পানি ধীরগতিতে নামছে। আর বন্যায় বেশকিছু কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রোববার খোয়াই নদীতে চুনারুঘাটের বালস্না পয়েন্ট ব্যতীত অন্যসব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। বালস্নার পানি এখনো বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর।
এদিকে, শনিবার রাত পর্যন্ত জেলার সাতটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৯৩ জন বন্যাকবলিত মানুষ অবস্থান করছিলেন।
জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকে লোকালয়ের পানি কমতে শুরু করেছে, আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া লোকজন ফিরতে শুরু করেছেন এবং সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড যায়যায়দিনকে জানিয়েছে।
সদর উপজেলার পশ্চিম মোহনপুর, সুলতান মাহমুদপুর ও আনোয়ারপুর ছোট বহুলা, জালালাবাদসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তাঘাটে পানি কমলেও বাসাবাড়িতে এখনো পানি জমে আছে। অনেকে কাঁচা ঘরবাড়ি মেরামত করছেন। অন্যের বসতবাড়িতে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন। পশ্চিম মোহনপুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাস্তার পানি নিষ্কাশন হলেও বাসাবাড়ি থেকে পানি নামতে আরও সময় লাগবে। এরপর বসতবাড়ি মেরামতে আরও সপ্তাহখানেক সময়ের প্রয়োজন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সুমি রানি বল জানান, সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলায় ১৮ হাজার ২৪০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত লোকের পরিমাণ ৭২ হাজার ৭৬০ জন। এখন পর্যন্ত ১২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু, সেখানে লোকসংখ্যা ১০৯৩ জন। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য এক হাজার ২৩৫ টন চাল মজুত আছে। বিতরণ করা হয়েছে ৩৪১ টন। দুই হাজার ১৯০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুত ছিল এবং বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার ৬৯০ প্যাকেট। নগদ ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে ৯ লাখ টাকা ইতোমধ্যে বিতরণ শেষ।
হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রভাংশু সোম মহান জানান, বন্যা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক, চারদিকে পানি কমতে শুরু করেছে। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে যারা আছেন, তাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত আছে।