শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১

লালমনিরহাটে তথ্য গোপন করে কলেজের শিক্ষক হওয়ার চেষ্টা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
লালমনিরহাটে তথ্য গোপন করে কলেজের শিক্ষক হওয়ার চেষ্টা

লালমনিরহাটে তথ্য গোপন করে একই সময় সরকারি-বেসরকারি দুটি প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে সুবিধা নিতে তোরজোড়ের অভিযোগ উঠেছে আব্দুল হাই নামে এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর বেসামরিক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৯৯৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত লালমনিরহাট মিলিটারি ফার্মে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত থেকে স্বেচ্ছাধীন অবসর নেন। অথচ তথ্য গোপন করে ২০১৮ সালে তার নামে এমপিও হওয়া কলেজের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হতে অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একাধিক লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রংপুর অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে।

অভিযোগে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৬ জুন জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ডিগ্রি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন আব্দুল হাই। যোগদানের পর বেতন ভাতা না পাওয়ার অজুহাতে তিনি কখনো শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেননি। ২০১৮ সালে আব্দুল হাই'র পদ এমপিওভুক্ত হলে তাকে নিয়মিত দায়িত্ব পালনের তাগিদ দেয় কলেজের পরিচালনা পর্ষদ। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিনাবেতনে দুই দফায় তিন বছরের ছুটি নেন আব্দুল হাই। ছুটি শেষ হওয়ার পরও দায়িত্বে ফিরে আসেননি। কিন্তু গেল বছর শেষের দিক থেকে আব্দুল হাই হঠাৎ নিয়মিত কলেজ আসা শুরু করেন। তার অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে কলেজের পরিচালনা পর্ষদ জানতে পারেন ১৯৯৬ সাল থেকে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত আব্দুল হাই সরকারি কর্মচারী হিসেবে লালমনিরহাট মিলিটারি ফার্মে উচ্চমান সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন। অবসরকালীন সুবিধা পেতে সরকারি চাকরির বিধি অনুসারে ২৫ বছর চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করতে হয়েছে তাকে। এ লক্ষ্যে ১৫ অক্টোবর ২০২২ সালে এলপিআর (লিভ প্রিপারেশন ফর রিটায়ারমেন্ট) নেন এবং ১০ অক্টোবর ২০২৩ সাল পর্যন্ত চাকরিতে নিযুক্ত থাকেন। ফলে তিনি কলেজে দায়িত্ব পালন করেননি। এতে পরিচালনা পর্ষদে বাধ সাধলেও কলেজে নিয়মিত আসছিলেন আব্দুল হাই। তবে সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলে বেতন-ভাতাদির সুবিধা নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। উপায়ন্তর না পেয়ে আঞ্চলিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করে পরিচালনা পর্ষদ।

অভিযুক্ত আব্দুল হাই জানান, 'আমি নিয়ম অনুযায়ী চাকরিতে বহাল এবং বেতন-ভাতা সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখি। কিন্তু একটি চিহ্নিত পক্ষ অদৃশ্য কারণে আমাকে হয়রানি করছে।'

অন্যদিকে সাপ্টিবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সুদান চন্দ্র রায়ের দাবি, আব্দুল হাই চাকরিতে বহাল বা সুবিধা ভোগের অধিকার রাখেন কি না সেটি পর্যালোচনার ব্যাপার। তবে দুই পক্ষের অনৈতিক চাপ অনুভব করছেন তিনি। যার ফলে অন্য শিক্ষকদের বেতন প্রাপ্তি বিলম্বিত হচ্ছে এবং নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। তিনি এর সুরাহা দাবি করেন।

কলেজের সদ্যবিলুপ্ত পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও অভিযোগকারী রুহুল আমিন সরকার বলেন, তথ্য গোপন করে একই সময় সরকারের বিধি মোতাবেক দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি কিংবা অর্থ দাবি করা দুর্নীতির শামিল।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চল পরিচালক অধ্যাপক আমির আলী জানান, 'অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে