ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে। গত দুই দিন বৃষ্টি না হওয়ায় এবং ভারতের পানির স্রোত কম থাকায় বন্যার পানি অনেকটাই নেমে গেছে। কোথাও কোথাও জমির আইল ভেসে উঠেছে। অধিকাংশ বাসা-বাড়ি, ঘর থেকে পানি নেমে গেছে। তবে নিচু এলাকার কৃষিজমি ও বাড়ির পানি পুরোপুরি নামেনি।
আখাউড়া স্থলবন্দর ও শুল্কবিভাগের অফিস চত্বরের পানিও অনেকটা নেমে গেছে। ইমিগ্রেশন অফিসেও পানি নেই। শনিবার সকাল থেকেই সূর্যের আলো দেখা যায়। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির পুরোপুরি উন্নতি হবে বলে আশা করছে উপজেলা প্রশাসন।
এর আগে, গত মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু। পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় প্রায় ৪০টি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। ইমিগ্রেশন অফিসে পানি প্রবেশ করায় গত বুধবার থেকে আখাউড়া-আগরতলা চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিন গাজির বাজার ও চেকপোস্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানি অনেকটা কমে গেছে। পানি সরে যাওয়ায় বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার করছেন কেউ কেউ। জাজিরবাজার এলাকার ভাঙা সেতুর ওপর থেকে পানি সরে গেছে। প্রতিদিনের মতো আজও বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা বিএনপি, হেফাজত ইসলামসহ নবীনগর উপজেলার প্রবাসী আলতাফ হোসেনের পক্ষে মোবারক হোসেন রতন, জেলা প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা বন্যার্তদের পাশে রয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজসহ, বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক ব্যক্তি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে।
আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ খাইরুল আলম বলেন, 'ইমিগ্রেশন অফিসে পানি প্রবেশ করায় আখাউড়া দিয়ে যাত্রী পারাপার বন্ধ ছিল। অফিসের পানি সরে গেছে। সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে রোববার দুপুর থেকে যাত্রী পারাপার শুরু করতে পারব।'
কালিকাপুর গ্রামের দুলাল মিয়া বলেন, 'আমার বাড়ির পানি সরে গেছে। কয়েকদিন খুব কষ্ট করেছি। এখন ভালো লাগছে।'
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মাহমুদুল হাসান বলেন, বন্যার কারণে বুধবার থেকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। শনিবার বন্দরের ইয়ার্ড থেকে পানি নেমে গেছে। পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে পৌাঁতে পারলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুনরায় আরম্ভ হবে।
আখাউড়া ইউএনও গাজালা পারভীন রুহি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। পানি বেশ কমে গেছে। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি। বন্যার্ত মানুষের খাবারের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রচুর ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।