গ্রেপ্তার এড়াতে আ'লীগের শতাধিক নেতাকর্মী আত্মগোপনে

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা ও সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্ণীপদ দাসসহ ৩৬ জনের নামে হামলা ও ভাঙচুরসহ দুটি নাশকতা মামলা হয়েছে। এছাড়াও এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার বান্দরবান পৌরসভার ওয়াপদা ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা শামীম হোসেন ও পৌর এলাকার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে বান্দরবান সদর থানায় এই মামলা দায়ের করেন। জানা যায়, গত ১৬ জুলাই বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্র্ণ মানববন্ধনে জেলা আ'লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা ও সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্ণীপদ দাসের নির্দেশে ছাত্রলীগসহ আ'লীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার কর্মসূচিতে বাধা দেয় এবং এক পর্যায়ে তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা করে। এতে শহরের কাশেম পাড়া এলাকার বাসিন্দা মনির উদ্দিন ও নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. জাকিরসহ বেশ কয়েকজন সাধারণ জনগণ আহত হন। ছাত্র জনতার ওপর হামলার ঘটনায় মো. শামীম হোসেন ও শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে বান্দরবান সদর থানায় ২৮ জনের নাম উলেস্নখ করে মামলা করেন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১২০ আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- জেলা আ'লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা, সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্ণী পদ দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অমল কান্তি দাশ, সৌরভ দাশ শেখর, চৌধুরী প্রকাশ বড়ুয়া, কাঞ্চনজয় তংচঙ্গ্যা, অজিত কান্তি দাশ, সাদেক হোসেন চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী, মো. মহিউদ্দিনসহ ৩৬ জনের নাম উলেস্নখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১২০ জন। এদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আ'লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীকে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করতে দেখলেও মামলার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে চলে গেছেন। দলটির কেন্দ্রীয় ও জেলা ছাড়াও কোনো পর্যায়ের নেতাদেরই খোঁজ মিলছে না। পাশাপাশি তাদের ঘনিষ্ঠ অনুসারীরাও বন্ধ রেখেছেন মোবাইল নম্বর। আবার অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছেন আ'লীগের সাধারণ কর্মীরা। জানা গেছে, এরই মধ্যে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আ'লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন বিএনপি, জামাতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচিগুলোতে। অন্যদিকে, প্রায় দেড় দশক নীরব থাকার পর জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মাঠে সরব রয়েছেন। দলীয় সদস্যদের নিয়ে করছেন মিটিং-মিছিল ও সভা। সমাগম বাড়ছে দলীয় কার্যালয়গুলোতে। জানা গেছে, শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার খবর নিশ্চিত হওয়ার পর বিজয় উৎসবে মেতে ওঠে ছাত্র-জনতা। এর মধ্যেই কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা জেলা আ'লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, বঙ্গবন্ধু পাঠাগারসহ বেশ কিছু আ'লীগের শীর্ষ নেতাদের বাসায় হামলা চালায়। এরপর থেকে জেলার অধিকাংশ প্রভাবশালী নেতা ঘর থেকে বের হননি। এরমধ্যে ৩৬ জনের নাম উলেস্নখ করে ও অজ্ঞাত আরও ১২০ জনের নামে মামলা হওয়ায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে চলে গেছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ মধ্যম সারির নেতারাও। জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, আমরা শিগগিরই মাঠে নামবো এবং তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।