পাবনার সাঁথিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাবসহ নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে আবারও ফুঁসে উঠেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক মহল। প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে ইউএনও অফিস ও শিক্ষকের বাড়ি ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা। গত ১০ দিন ধরে পদত্যাগের দাবিতে স্কুলে তালা দিয়ে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়।
গত ২০ আগস্ট প্রধান শিক্ষকের বাড়ি ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা। তাকে বাড়িতে না পেয়ে এলাকার মানুষকে ম্যাসেজ দিয়ে আসে, 'তাকে পদত্যাগ করতে বলবেন। পদত্যাগ না করলে হাসিনার মতোই তাকে লজ্জাজনকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।'
২১ আগস্ট শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস ঘেরাও করে রাখে প্রায় তিন ঘণ্টা। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সরে এসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্যালয়ের সামনে। তারা জানান, পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। রোববারের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সোমবার আমরা আবারও ইউএনও অফিস ঘেরাও করব। এদিকে ৫ আগস্ট থেকে প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথ পলাতক থাকায় সাঁথিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ ম্যাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রধান শিক্ষকের অপসারণের একদফা দাবিতে ৯ দিন আগে বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব, রসিদবিহীন অতিরিক্ত অর্থ আদায়, প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও নির্যাতন করা, ছাত্রছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ সাতটি অনিয়ম উলেস্নখ করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, অবিলম্বে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আনার দাবি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে। অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথের কাছে জানতে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ইউএনও জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ পেয়েছি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আমিও শুনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নির্দেশনা এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'