দীর্ঘ ৮ বছর তিনমাস কারান্তরীণ থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লায়ন মো. আসলাম চৌধুরী। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এ সময় জেলগেটে দলের নেতাকর্মী তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। জেল থেকে মুক্ত হয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে নিজের বাড়িতে ফিরেছেন আসলাম চৌধুরী।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ইব্রাহীম বলেন, 'আসলাম চৌধুরী কারাগারে ছিলেন। জামিনের সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তিনি কারাগার থেকে বের হন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা উলেস্নখ করে ২০১৬ সালের ১৬ মে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে আসলাম চৌধুরীকে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর তার বিরুদ্ধে ৭৬টি রাজনৈতিক মামলা হয়।
আসলাম চৌধুরীর ব্যক্তিগত আইনজীবী অ্যাডভোকেট কেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, 'আসলাম চৌধুরীকে ৭৬টি রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাবন্দি রাখা হয়। ৭৫টি মামলায় জামিন হয়েছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে ঢাকার কোতোয়ালি থানার রাজনৈতিক মামলায় এজাহারে নাম না থাকা সত্ত্বেও ২০২১ সালে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মুক্তি প্রক্রিয়া আটকে রাখা হয়। ওই মামলায় ৫ জানুয়ারি ২০২২ সালে মহামান্য হাইকোর্ট জামিন দিলে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে আপিল করে জামিন স্থগিত করা হয়। সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়েরকৃত আপিল খারিজ করে দেন।
এর আগে ১৯ আগস্ট রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় আসলাম চৌধুরীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখে আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের জামিনাদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। তার আগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আসলাম চৌধুরীকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আসলাম চৌধুরীর জামিন দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত ছিল।
ফুল দিয়ে বরণ : এদিকে, বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর মুক্তির খবরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে সকাল থেকেই নেতাকর্মীদের ঢল নামে। তিনি কারাগার থেকে বের হওয়ার পর নেতাকর্মী তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এ সময় সেখানে কর্মীদের স্স্নোগান দিতে দেখা যায়।
দেখা গেছে, ট্রাক, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে কর্মীরা কারাগারের সামনের সড়কে জড়ো হন। গলায় গোলাপ ফুলের মালা পরা আসলাম চৌধুরী ছাদখোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে দলীয় নেতাকর্মীর উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর সামনে পেছনে মোটর সাইকেল, ট্রাক ও অন্য গাড়িবহর নিয়ে আসলাম চৌধুরীকে এগিয়ে যান সীতাকুন্ডের পথে।