শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. বদরুজ্জামান ভুইয়া ও প্রক্টর ড. আব্দুল কাইউমসহ ২০ জন। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকালের মধ্যে তারা পদত্যাগপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপাচার্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান। এরপর একের পর এক পদত্যাগ করেন প্রক্টরসহ অন্যরা। ববি রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি দাবি করে গত কয়েকদিন থেকে ক্যাম্পাসে তাদের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চলছিল। আন্দোলনের মুখে উপাচার্য সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিজেকে সব রকম রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট হননি শিক্ষার্থীরা। তারা তাদের দাবিতে অনড় থাকেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার উপাচার্য প্রফেসর ড. বদরুজ্জামান ভুইয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেন। প্রেরিত পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের কথা উলেস্নখ করেছেন।
জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলনের চাপে সোমবার দুপুর থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. বদরুজ্জামান ক্যাম্পাস ছেড়ে আত্মগোপনে যান। এরই মধ্যে তিনি সোমবার সন্ধ্যায় ১০ মিনিট সিন্ডিকেট সভা এবং মঙ্গলবার শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন।
অন্যদিকে ভিসির পদত্যাগের কিছুক্ষণ পর প্রক্টর ড. আব্দুল কাইউম তার পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামের কাছে এই পদত্যাগপত্র জমা দেন। সর্বশেষ বিকাল ৪টা পর্যন্ত একে একে ভিসি ও প্রক্টরসহ বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা ২০ জন পদত্যাগ করেন। তাদের মধ্যে সহকারী প্রক্টর, চারটি হলের প্রভোস্ট, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, আবাসিক শিক্ষক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং লাইব্রেরিয়ান রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, পদত্যাগকারীরা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থক ও সদ্য বিদায়ী ভিসি'র আস্থাভাজন ছিলেন।
রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত আমার হাতে ভিসি স্যারসহ ২০ জনের পদত্যাগপত্রের কাগজ পেয়েছি। পদত্যাগকারীরা সবাই শিক্ষক। তারা তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। শুধুমাত্র পদত্যাগের মাধ্যমে ভিসি স্যারের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রইল না।
প্রসঙ্গত, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বদরুজ্জামান ভুইয়া আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক, শিল্প ও বাণিজ্য-বিষয়ক উপ-কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া প্রক্টর ড. আব্দুল কাইউম বরিশাল সিটি নির্বাচনে নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।