নান্দাইলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ৩ লাশ দাফন, বিচার নিয়ে শঙ্কা
প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই ৩ জনের লাশ দাফন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ওই তিন জনের পরিবার। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ-সংঘাতের সময় গুলিতে প্রাণ হারান ময়মনসিংহের নান্দাইলের ৬ জন। এর মধ্যে এক শিশু ও দুই কিশোরের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই গোপনে এক অজানা আতঙ্কের মধ্যে গ্রামের বাড়িতে এনে তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়েছে। এ অবস্থায় সরকার পতনের পর সব হত্যাকান্ডের বিচারের কথা বলা হলেও এই তিনজনের পরিবারের লোকজন বিচার নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।
স্থানী সূত্র জানায়, উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের চামারুলস্নাহ গ্রামের মো. আজিজুল ইসলাম কুসুমের ছেলে জুবাঈদ (১৫) গত ২০ জুলাই নিহত হন ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে। জুবাঈদ সেখানে একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন। দুপুরে সড়ক পার হয়ে মালিকের বাসায় যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। একইদিন সদর ইউনিয়নের সাভার পূর্বপাড়া গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. হুমায়ুন কবির (২১) নিহত হন গাজীপুরের সাইনবোর্ডের ভুষির মেইল মেম্বার বাড়ি এলাকায়। সেখানে তিনি একটি মুদির দোকানের কর্মচারী ছিলেন। আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ দোকানের ভেতরে গিয়ে গুলি করে।
অন্যদিকে গত ২১ জুলাই নিহত হন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দেউলডাংরা গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. জামান মিয়া (১৭)। তিনি নরসিংদী সদরের একটি ডাইং কারখানায় কাজ করতেন। ওইদিন মেস থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারখানায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিনে মারা যান নান্দাইলের শেরপুর ইউনিয়নের মাদারীনগর গ্রামের একেএম শহিদুল ইসলাম জয়নাল (৪৫)। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। সরকার পতনের আনন্দ মিছিল দেখতে বের হলে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। একই দিনে গাজীপুরের মাওনা এলাকায় নিহত হয় সেখানকার একটি মাদ্রাসাছাত্র রাকিবুল হাসান সাজু (১২)। সে নান্দাইল উপজেলার মুশলস্নী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের দিনমজুর খোকন মিয়ার ছেলে। বাসা থেকে মিছিল শুনে মায়ের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে বের হয় ছবি তোলার জন্য। সেখানেই পুলিশের গুলিতে সাজু নিহত হয়। একই স্থানে আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের আব্দুল হাইয়ের পুত্র জুয়েল মিয়া (৩৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি মাওনা এলাকায় থাকতেন।
জানা যায়, ৬ জনের মধ্যে শহিদুল ইসলাম জয়নাল, জামান ও জুয়েল মিয়ার লাশের ময়নাতদন্ত হলেও বিনা ময়নাতদন্তে লাশ নিয়ে আসে জুনাঈদ, হুমায়ুন ও সাজুর পরিবার। তাদের মধ্যে জুনাঈদের বাবা কুসুম জানান, তার ছেলের লাশ হাসপাতালে পড়েছিল। পরে এক অজানা আতঙ্কে কৌশল অবলম্বন করে রাতেই লাশ বাড়িতে এনে দাফন করেন।