প্রথমবারের মতো গ্রীষ্মকালীন লাউ চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের বির্তুল গ্রামের কৃষক মো. সোহাগ সরকার। প্রতিদিন তার বাগান থেকে খুচরা ও পাইকারি দরে লাউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। তিনি মালচিং পদ্ধতিতে লাউ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। এতে কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়াই চাষ করে ইতোমধ্যে এলাকায় আদর্শ লাউ চাষি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন কৃষক সোহাগ। তাকে দেখে লাউ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন আশপাশের আরও অনেক কৃষক।
সরেজমিন দেখা গেছে, মাচায় ঝুলে আছে গাছের অসংখ্য ছোট বড় লাউ। প্রতিনিয়ত সকাল-বিকাল চলছে লাউক্ষেত পরিচর্যা। বাজারে বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় বেশ খুশি কৃষক সোহাগ। ৩ বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে লাউ চাষ করতে তার খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। তবে সোহাগ জানান, এ পর্যন্ত লক্ষাধিক টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। আরও কমপক্ষে অর্ধলক্ষাধিক টাকার লাউ বিক্রি করার আশা তার।
তিনি আরও জানান, লাউয়ের এ রকম ফলন হবে আগে বিশ্বাস করতেন না। পরে হাতেকলমে মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দেওয়া লাউ চাষ পদ্ধতি শেখানো হয়। এছাড়াও কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তাই প্রথমবারে তিনি করেছেন বাজিমাত।
লাউ চাষি সোহাগ বলেন, 'গ্রীষ্মকালীন লাউয়ের চাষ করে এত লাভ হবে এটা কখনো ভাবিনি। তাই আগামীবার লাউ চাষ আরও বাড়ানোর ইচ্ছা আছে।'
প্রতিবেশী রনি সরকার, মাসুদ সরকার ও মাসুম মিয়া বলেন, 'এরই মধ্যে এলাকায় কৃষক সোহাগের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন তার লাউ ক্ষেত দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন। আমরা ইতোমধ্যে সোহাগের পরামর্শ নিয়েছি। ইনশাআলস্নাহ আগামীতে আমরা এই গ্রীষ্মকালীন লাউ চাষ করব।'
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের উলুখোলা বস্নকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনির উদ্দিন মোলস্না বলেন, গ্রীষ্মকালীন লাউ চাষ করে সোহাগ মৌসুমের চেয়ে ৩ গুণ বেশি লাভবান হয়েছেন। এখন তাকে দেখে অন্যরাও এই অসময়ের লাউ চাষে এগিয়ে আসছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, প্রথম অবস্থায় কৃষকদের লাউ চাষে আগ্রহী করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। কিন্তু সোহাগের সাফল্য দেখে অন্য কৃষক উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। তবে লাউ সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও দেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নতুন নতুন কৃষি উদ্ভাবনের ফলে এখন সব মৌসুমেই লাউ উৎপাদন সম্ভব।