বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বোরহানউদ্দিনে সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স

খসে পড়ছে পস্নাস্টার মৃতু্যঝুঁকি বাড়ছে
বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি
  ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ভোলার বোরহানউদ্দিনে দীর্ঘদিন দরে সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স -যাযাদি

ভোলার বোনহানউদ্দিন ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে এখন নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পুরাতন ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের ছাদের পস্নাস্টার প্রতিদিন ধসে পড়ছে। ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে ভবন ক্রমশ দেবে যাওয়ায় চতুর্দিকের গ্রিল বেঁকে গেছে। এ অবস্থার মধ্যে এ ভবনে আতঙ্ক নিয়ে জরুরি বিভাগসহ দাপ্তরিক কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে যে কোনো মুহূর্তে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অন্যদিকে গত ৬-৭ বছর আগে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর ভেঙে যাওয়ার পর পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় ডাক্তার-নার্সরা চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অনতিবিলম্বে ২০০৪-০৫ সালের দিকে নির্মিত সম্প্রসারিত ১৯ শয্যার ভবনে সকল কার্যক্রম স্থানান্তর করা হবে। এর ফলে ২ লাখ ৬৩ হাজার লোক সংখ্যার একমাত্র স্বাস্থ্যসেবার জায়গা সংকুচিত হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

সরেজমিন দেখা যায়, ১৯৮২ সালে নির্মিত পুরাতন ভবনের জরুরি বিভাগে ছাদের বড় অংশ নিয়ে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। রোগীদের সেবা দিচ্ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী মিজানুর রহমান। ওই স্থানে তিনিসহ উপ-সহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, কয়েকদিন আগে তাদের পাশে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। অল্পের জন্য তারা রক্ষা পেয়েছেন। বারান্দায় ছাদের কার্নিসের বিশাল অংশ নিয়ে ধসে ঝুলে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তার রুমের ছাদেও ফাটল। অন্যদিকে দেখা যায় বারান্দার গ্রিলগুলো বেঁকে গেছে। ভবন দেবে যাওয়ার ফলে এরকম হয়েছে; এটা স্পষ্ট।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিরুপম সরকার জানান, মাত্র দুইদিন আগে বারান্দা দিয়ে রুমে যাওয়ার সময় হঠাৎ সামনে পলেস্তারা খসে পড়ে। একটু উনিশ-বিশ হলে দুর্ঘটনা হতে পারত। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় মহিলা ও শিশু বিভাগ। ওই বিভাগের অবস্থাও একই রকম।

এদিকে সম্প্রসারিত ভবনে স্থানান্তর হলে স্থান সংকটে চিকিৎসা সেবা সংকুচিত হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। বোরহানউদ্দিন প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, উন্নয়নকর্মী ওমর ফারুক তারেক বলেন, 'সব কিছুরই একটা মেয়াদকাল থাকে। ১৯৮২ সালে নির্মিত ভবনটি অনেক আগেই জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। যথাসময়ে ভবন ভেঙে নতুন ভবন করলে এ সংকট হতো না।'

ভোলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. রুবেল জানান, ৩১ শয্যাবিশিষ্ট বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সটি পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিত্যক্ত ঘোষণার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. নিরুপম সরকার বলেন, 'শিগগিরই আমরা পুরাতন ভবন থেকে সরে যাচ্ছি। স্থান সংকটে চিকিৎসা সেবা কিছুটা বিঘ্ন হয়তো হবে। তবে আমরা সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাব।'

ভোলা জেলা সিভিল সার্জন ডা. কেএম শফিকুজ্জামান বলেন, 'পুরাতন ভবন ব্যবহার অনুপযোগী। দুই-এক দিনের মধ্যেই এ ভবন ত্যাগ করা হবে। নতুন ভবন নির্মাণ অপারেশন পস্নানে আছে। এ অর্থ-বছরে নতুন ভবন নির্মাণ হওয়ার কথা রয়েছে। জরুরিভিত্তিতে আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজ নিচ্ছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে