নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে সহায়-সম্বলহীন পরিবারের সন্তান নাইম ইসলাম (১৮)। তিনি উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নের সোনাকুড়ির মধ্যে পাড়া গ্রামের মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে। ৩ ভাই ১ বোনের মধ্যে নাইম সবার ছোট। নাইম স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে হেফজো বিভাগে লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের সদস্যদের মুখে দুই মুঠো অন্ন জোগাতে ২০১৫ সালে পাড়ি জমান ঢাকায়। ঢাকার সাভারে শিমুলতলা ফকির বাড়ি সিএম গার্মেন্টসে অপারেটর পদে চাকরি নেন। তার যৎসামান্য আয়ে কোনো রকমে চলছিল অভাবী মায়ের সংসার। এ আয়ের জীবন যেন নিস্তব্ধ করে দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলি।
সরেজমিন রোববার নিহতের পরিবার জানায়, গত ৪ আগস্ট নাইম সন্ধ্যা ৭টায় তার কর্মস্থল থেকে ঢাকা সাভার শিমুলতলা ফকির বাড়ি বাসায় ফিরছিল। পথে আন্দোলনকারীদের মিছিল চলাকালে পেটে গুলিবিদ্ধ হন নাইম। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৬ আগস্ট ভোররাতে তার মৃতু্য হয়। ওইদিন তার মরদেহ নিয়ে এসে গ্রামের বাড়িতে দাফন করেন।
ঘটনার ৫ দিন পেরলেও থামেনি উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারানো মা হাসনা বানুর আহাজারি। তার এমন বুকফাটা আহাজারিতে গোটা এলাকায় মানুষ শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। বিলাপ করছেন, কিভাবে চলবে তার অভাবের সংসার। কে ধরবে সংসারের হাল। এমনিতে স্বামী মারা যাওয়ার পর নিঃসঙ্গ হয়ে গেছেন। এর মধ্যে ছেলেকেও হারালেন। স্বামী হারানোর শোক ভুলে থাকার চেষ্টা করছিলেন। ছেলেকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু সে স্বপ্ন এখন চুরমার হয়ে গেল। এমন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁতে গিয়ে তিনি বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন।