বাঁশখালীতে ঢলের পানিতে ডুবেছে লোকালয়

ভারী বৃষ্টিপাত :মৌলভীবাজারে ফের বাড়ছে নদনদীর পানি

পানিবাহিত রোগ ও ধসে পড়া ঘর-বাড়ি মেরামতে নেই কোন উদ্যোগ

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ঢুবে যাওয়ায় লোকালয় -যাযাদি
ভারী বৃষ্টিপাতে মৌলভীবাজারে ফের বাড়ছে নদনদীর পানি অন্যদিকে, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে ডুবে গেছে লোকালয়। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার জানান, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী নদী বেষ্টিত মৌলভীবাজার জেলার ৪টি নদ নদীতে চতুর্থবারের মতো ফের বেড়েছে পানি। জেলার কুশিয়ারা, মনূ, ধলাই ও জুড়ী নদে শনিবার আবারও পানি বেড়েছে। শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। সাগরের লঘু চাপের প্রভাব ও ভারতের ঢলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী পাড়ের মানুষ আবারও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। মৌলবীবাজার পাউবো জানায়, জেলার জুড়ী নদে বিপদসীমার ৮৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছড়াও মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপদসীমার ৮ দশমিক ১৪ সে.মি. নিচ দিয়ে, ধলাই নদে ১৬.৭৫ সে.মি. ও মনূ নদে বিপদসীমার ১০.১১ সে.মি. নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে কুশিয়ারা নদী পাড়ে গেলে দেখা যায়, দীর্ঘ ৪ মাস ধরে লাগাতার বন্যায় বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা পানি বাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। নদী পাড়ের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের তাহিদ আলী বলেন, আমার ঘরের টিন ও বেড়া ধসে পড়েছে। পানিবাহিত রোগ ও ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামত করতে এখনো কেউ এগিয়ে আসেননি। মৌলভীবাজার পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, ভারতের ত্রিপুরায় বৃষ্টি হওয়াতে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আতঙ্কের কিছুই নেই। বৃষ্টি থেমে গেলে পানি কমে আসবে। বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি পানির ঢলে বেশিরভাগ এলাকার লোকালয় ডুবে গেছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি পানির ঢলে উপজেলার পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, সরল, বৈলছড়ি, পৌরসভা, শীলকূপ, চাম্বল, পুঁইছড়িসহ বিভিন্ন এলাকার লোকালয়ে হাঁটু পরিমাণ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও পানি জমে থাকার কারণে মাটির ঘর ভেঙে পড়েছে। অনেকের মৎস্য প্রজেক্ট ও কৃষিজমি ডুবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৈলছড়ি ইউপির চেচুরিয়া এলাকার আকতারুল হক জানান, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি ধসে তার সেমিপাকা বাড়ির দেওয়াল ভেঙে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম সালাহউদ্দিন কামাল জানান, ভারী বর্ষণে সাধনপুর ইউপির বিভিন্ন স্থান পস্নাবিত হয়েছে। পানিতে মাস্টার পাড়ায় একটি মাটির ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে মাটি চাপায় দুটি ছাগল মারা গেছে এবং ভূপতি দে কালু ও তার স্ত্রী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। কৃষি জমিসমূহ পানিতে ডুবে গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রকৌশলী লিপটন ওম জানান, ইউনিয়ন পর্যায় থেকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেক জানান, বাঁশখালীর প্রধান সড়কের পূর্ব পাশের বেশিরভাগ এলাকা এখনো পানির নিচে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যাবে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তাদের টিম মাঠে কাজ করছে। বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জানান, পিআইও অফিসে মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হবে।