খুলনার পাইকগাছার চাঁদখালী ইউনিয়নে নৌর নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার যেন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংস্কারের অভাবে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে চলাচলের। ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। দেখার কেউ নেই। এখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জেলা বা উপজেলা সদরে যেদিকে যাক উত্তর গড়ের আবাদ গ্রামের মানুষের একমাত্র সহজ রাস্তা পূর্ব গজালিয়া। সহজে যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন প্রায় শত শত মানুষ ওই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হয়ে পূর্ব গজালিয়া ডাবল ইটের রাস্তায় উঠে। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় এবং বৃষ্টির হওয়ায় আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়ে এলাকাবাসী।
গ্রামের অনেক গাড়িচালক মোটরভ্যান, নসিমন, করিমন, পাকা রাস্তার ওপর, কখনো অন্যের বাড়িতে গাড়ি রেখে সাঁকো পার হয়ে বাড়ি ফেরে। ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ উত্তর গড়ের আবাদ গ্রামটিতে দুই হাজারের বেশি লোকের বসবাস। গ্রামটিতে নেই কোনো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গ্রামে রয়েছে ৪টি জামে মসজিদ, ২টি ঈদগাঁ, ২টি কওমি মহিলা মাদ্রাসা। গ্রামের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী পূর্ব গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যেতে সহজ পথ বাঁশের সাঁকো, তা এখন মরণফাঁদ হয়ে পড়েছে। শুকনো মৌসুমে স্কুল শিক্ষার্থীরা অনেক সময় বাদুড়িয়া ব্রিজ হয়ে অথবা চৌমুহনি বাজার ঘুরে আধাকিলোমিটার পথ হেঁটে স্কুলে যেতে হয়। নৌর নদীর ওপর অত্র এলাকার একমাত্র অবলম্বন বাঁশের সাঁকো নষ্ট হওয়ায় পারাপারে বিপাকে পড়ছে কয়েক শতাধিক মানুষ।
স্থানীয় রুহুল কুদ্দুস বলেন, বর্ষাকালে আমাদের উত্তর গড়ের আবাদ গ্রামের মাটির রাস্তাটিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকার মানুষের। দুর্ভোগ এড়াতে নদীর ওপর সাঁকো পার হয়ে চলাচলে সহজ হয়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত কয়েক বছর আগে মসজিদের সামনে বাঁশের সাঁকোটি গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় প্রথমে সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছিল। ২ থেকে ৩ বছর যেতে না যেতে সাঁকো নষ্ট হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম সরদার বলেন, গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় কয়েকবার সাঁকোটি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পানিতে ২-৩ বছরের মধ্যে আবার নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য এখানে সরকারিভাবে ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি জানাই।
ইউপি সদস্য নজরুল সরদার বলেন, 'নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো নষ্ট হওয়ায় এলাকার মানুষ পারাপারে ভোগান্তিতে পড়ে। আমি ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাদা আবু ইলিয়াসকে এ বিষয়ে অবহিত করলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে পরিষদে কোনো বরাদ্দ নেই। পৌষ মাসে নতুন বাজেটে ওখানে টেকসই সাঁকো নির্মাণ করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী শাফিন শোয়েব জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটি আবেদন করলে সেতুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে পাঠানো হবে।