পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তাকে দ্রম্নত অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সাধারণ মানুষ।
বুধবার দুপুরে পাবনা কোর্ট চত্বরের সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পাবনা ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (প্রস্তাবিত) জায়গা গত বছরের জুন মাসে কলেজের নামে দাতা সদস্যের দানকৃত জমি রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্র চেয়ে কলেজের জমির রেজিস্ট্রেশনের কাজ স্থগিত করে দেন।
বক্তারা আরও বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে গত বছরের ৫ আগস্ট পাবনা জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্র চেয়ে আবেদন করা হয়। সেদিন জেলা প্রশাসক কর্তৃক অনুমতিপত্র দেওয়া হয়। এসব অনুমতিপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মঙ্গলবার পাবনা ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (প্রস্তাবিত), কলেজের নামে দানকৃত জমি রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী তালবাহানা করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এছাড়াও তিনি প্রতি দলিলে তার পেশকারের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা নেন এবং কারণে-অকারণে মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণের পাশাপাশি আইনের কথা বলে হয়রানি করেন। পাবনা সদর রেজিস্ট্রার অফিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে প্রতিদিন প্রায় কমবেশি শত দলিল সম্পাদিত হয়। দিনে কয়েক লাখ টাকা অবৈধভাবে আয় করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এছাড়াও শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড, পাবনাসহ আশেপাশের পাঁচ জেলায় চিরচরিত ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক শিক্ষার কোনো কলেজ নেই। উক্ত শিক্ষা কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে কলেজ কমিটির দাতা সদস্য ব্যক্তি মালিকানা জমি বিনা স্বার্থে কলেজকে দান করার জন্য ঢাকা হতে সরাসরি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল করে দিতে যান। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রারের হীন-মানসিকতার কারণে দাতা অর্থ এবং সময় ব্যয় করে। দলিল লেখক সমিতির নামেও অতিরিক্ত অর্থ আদায় হয়। এই অফিসে অনেক দুর্নীতিবাজ মুহুরি রয়েছে। তাদের মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একট দলিল তুলতে গেলেও এখানে ঘুষ দিতে হয়। জমি রেজিস্ট্রেশন করতে গেলেও আগে উৎকোচ দিতে হয়।
এজন্য দ্রম্নত ইউসুফ আলীকে অপসারণ করার দাবি জানান বক্তারা। সেই সঙ্গে এই অফিসে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবিও জানানো হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পাবনা ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান, কলেজের প্রভাষক মো. বাকিবিলস্নাহ, প্রভাষক হেকিম মুরাদ হোসেন, পাবনা ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ম্যানেজিং কমিটির সহ-সম্পাদক মুক্তার হোসেন ও কলেজের অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী বলেন, 'আমি অনুমতিপত্র চাইনি তাদের কাছ থেকে। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে এগুলো ভিত্তিহীন।'
পাবনা জেলা সাব-রেজিস্ট্রার দিপক কুমার সরকার বলেন, এসব অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।