মেহেরপুরে পানি সংকটে পাটের ফলনে বিপর্যয়

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

গোলাম মোস্তফা, মেহেরপুর
মেহেরপুরে পাটচাষিদের মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা পড়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে একদিকে পাটের ফলন বিপর্যয় অন্যদিকে পাট জাগ দিতে পানির সংকট। নদীগুলোতে পাট জাগ দিতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় নিম্নাঞ্চল, পুকুর ও গর্তে শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দিতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচের মুখে পড়েছেন চাষি। বাজারমূল্যও চাষিদের অনুকূলে নেই। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন পাটচাষিরা। কৃষি বিভাগের হিসেবে চলতি মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও পাঁচ হাজার ৩৭০ হেক্টর কম। পাট আবাদ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে পাটের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া এবং পাট জাগ দেওয়ার জন্য পানি না পাওয়া। পাট বপন থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত চাষিরা কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি পায়নি। ফলে সম্পূরক সেচ দিয়ে পাটের আবাদ করতে হয়েছে চাষিদের। যার কারণে পাট গাছ সেভাবে বাড়েনি। ফলে বিঘাপ্রতি ৬-৭ মণের বেশি ফলন পাচ্ছে না। এরপর পাট কেটে জাগ দেওয়ার সমস্যা। পুকুর ও ডোবায় পানি না থাকায় শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি দিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে চাষিদের। পুকুর লিজ নিয়ে পাট জাগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ গুণতে হচ্ছে তাদের। খাল-বিল যেগুলো আছে, সেগুলো মৎস্যজীবীদের দখলে। সেখানে পাট জাগ দেওয়ার সুযোগ নেই চাষিদের। তবে এবার বড় পানির উৎস ভৈরব নদীতে প্রশাসন থেকে পরিবেশ ঠিক রেখে পাট জাগ দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এ ছাড়াও কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নিচু এলাকায় কিছুটা পানি জমায় পাট জাগ দিলেও সেটা চাষিদের কাঙ্ক্ষিত না। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় এদিকে যেমন ফলন বিপর্যয় অন্যদিকে পাট পচিয়ে ঘরে তুলতে অতিরিক্ত খরচ। এর ওপর বর্তমান পাটের বাজারমূল্যেও হতাশ চাষি। সব মিলিয়ে এবার পাট আবাদে লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষি। চাষিরা জানান, অতিরিক্ত খরচের কারণে এবার বিঘাপ্রতি পাট চাষে খরচ হয়েছে ১৫-১৬ হাজার টাকা, যা বর্তমান বাজার দামে লাভ হচ্ছে না। পাটের দাম তিন হাজার টাকা হলে লাভ হবে বলে মনে করেন তারা। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথমদিকে পুকুর-ডোবায় শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তবে কয়েকদিন বেশ বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং নিচু এলাকায় পানি জমেছে, যেখানে এখন চাষিরা পাট জাগ দিতে পারবেন।