তিতাসে থানা কার্যক্রমে এখনও ফেরেনি পুলিশ

প্রকাশ | ১২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

তিতাস (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
কুমিলস্নার তিতাসে সীমিত আকারে থানা কার্যক্রম শুরু করেছে সেনাসদস্যরা। সাতদিন অতিবাহিত হলেও কোনো পুলিশ সদস্য কর্মক্ষেত্রে যোগদান করেনি। থানা থেকে লুট হওয়ায় কিছু অস্ত্র-গুলি ও মালামাল জমা দিয়েছে স্থানীয়রা। জানা যায়, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বিক্ষুব্ধরা তিতাস থানায় হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। এ সময় থানায় থাকা অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটে নেয় তারা। ওইদিন গভীররাতে পুলিশের এক এসআই ও এক কনস্ট্রেবলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ৬ আগস্ট সকালে দ্বিতীয় দফা লুটপাট চালিয়ে থানা ভবনের দরজা-জানালা, আসবাবপত্রসহ সব মালামাল লুট হয়। তবে থানা থেকে কি পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি লুট হয়েছে, সে বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। ৮ আগস্ট থানা ভবন পরিদর্শনে আসেন কুমিলস্না সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম। ৯ আগস্ট ভোর থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল থানা ভবনে অবস্থান করছেন। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা আল আমিন জানান, পুলিশ এখনো থানার দায়িত্ব নেয়নি। সেনাবাহিনীর সঙ্গে আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা অস্ত্র উদ্ধার ও থানা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। লুট হওয়া অস্ত্রগুলো ফিরিয়ে দিতে আমরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছি। কেউ কেউ নিজ দায়িত্বে কিছু অস্ত্র-গুলি ও মালামাল ফিরিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, রোববার দুপুর পর্যন্ত স্থানীয় সাংবাদিক ও জনসাধারণের সহায়তায় ইতোমধ্যে আমরা একটি এলএমজি, একটি ৭.৬২ মিমি রাইফেল ও ৫ রাউন্ড গুলি এবং দুইটি শটগান ও ১০ রাউন্ড রাবার কার্তুজ ও ১০ রাউন্ড সিসার কার্তুজ, একটি টিয়ারশেল গান, এক রাউন্ড টিয়ারশেল, একটি পিস্তল, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, দুটি ম্যাগাজিন, দুটি ছুড়ি, একটি হ্যান্ডকাপ, পুলিশের সেফটি গার্ড, ৫টি অকেজো মোটরসাইকেল, একটি পিকআপ, দুটি পাম্প, বিভিন্ন আসবাবপত্র, দুটি ল্যাপটপ, একটি টিভি, একটি ফটোকপিয়ার, প্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন, স্ক্যানার, নানা ধরনের আসবাবপত্র ও অন্য মালামাল জনগণের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিতাস থানার ওসি কাঞ্চন কান্তি দাশ জানান, 'কোথাও যে একটু বসব সেই ব্যবস্থা নেই। থানা ভবনটাই শুধু দাঁড়িয়ে আছে; একটু পানি খাব, সেই গস্নাসটাও লুট করা হয়েছে। আমিসহ অনেক পুলিশ সদস্য অসুস্থ। দুইজন সহকর্মীকে হারিয়েছি।' তিনি আরও জানান, 'অনেক পুলিশ সদস্যের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না, তারপরও কি পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি লুট হয়েছে তার তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।' উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমাইয়া মমিন বলেন, পুলিশ এখনো আসেনি। আইনিসেবা চালু করতে কিছুটা সময় লাগবে। নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠনের কোনো অফিসিয়াল চিঠি পাইনি। দিকনির্দেশনা পেলে সেই আলোকে কমিটি গঠন করা হবে।