শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

উপাচার্য ও অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

স্বদেশ ডেস্ক
  ১২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
লক্ষ্ণীপুরে কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ -যাযাদি

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

চাঁদপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) উপাচার্য ড. নাসিম আখতার এবং অস্থায়ী রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন খান ও তাজনীন তাজ ছোঁয়া।

লিখিত বক্তব্যে তারা বলে, কোটা সংস্কারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে সড়কে অবস্থান নেয়। ওই সময় আমাদের নিরাপত্তা না দিয়ে উপাচার্য ড. নাসিম আখতার বিরোধিতা করেছেন। আমাদের কর্মসূচি পালন করতে দেননি এবং ছাত্রলীগের ক্যাডারদের নিয়ে হুমকি দিয়েছেন। তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নাম ও মোবাইল নম্বর জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে দিয়েছেন। পরে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ফোন করে আমাদের হুমকি দিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, 'উপাচার্য আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বলপ্রয়োগ করে বন্ধ করেছেন এবং আমাদের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন এবং নিরাপত্তা দিতে চেষ্টাও করেননি। যে কারণে আমার সকল শিক্ষার্থী সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের এই উপাচার্যকে আর দায়িত্বে দেখতে চাই না। অনতিবিলম্বে তার পদত্যাগ চাই। তাই আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার পদত্যাগ করতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের যে অস্থায়ী রেজিস্ট্রার আছে তাকেও পদত্যাগ করতে হবে।'

চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান শোভন, এনটিভি ও জাগো নিউজের চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি শরীফুল ইসলামসহ জাতীয় গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

লক্ষ্ণীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্ণীপুর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মাহবুবুল করিমের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আন্দোলন কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ এবং কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার অধ্যক্ষ মাহবুবুল করিমের পদত্যাগের দাবিতে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে তারা। শিক্ষার্থীরা বলে, বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে কলেজের একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। কলেজ অধ্যক্ষ কোনো শিক্ষার্থীর খোঁজখবর নেননি। এমনকি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের প্রতিও তার অনেক বিদ্বেষ ছিল।

আন্দোলন সমর্থনকারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর ড. আবু সিনা সৈয়দ তারেক বলেন, 'সরকার পতনের পর থেকে ৫ তারিখ থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। আমরা জানি না তিনি একজন অধ্যক্ষ, তিনি কেন পলায়ন করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা অধ্যক্ষের অপসারণ চেয়েছে, তারা বিক্ষোভে করেছে। আমরা চাই না অধ্যক্ষের জন্য কলেজে কোনো বিশৃঙ্খলা হোক। তাই আমরা শিক্ষকরা সবাই একত্রিত হয়েছি আমরা অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাই।'

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের চিলমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিতেন্দ্র নাথ বর্মণের অপসারণ দাবিতে অধ্যক্ষের অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা ওই অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।

জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিতেন্দ্র নাথ বর্মণ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তার অযোগ্যতার কারণে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান কমে গেছে। বিগত দিনে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করলেও বর্তমানে একশ' শিক্ষার্থী রয়েছে। এ ছাড়াও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে শিক্ষকদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এদিকে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হলেও এ বিষয়ে কোনো শিক্ষকই মুখ খুলছেন না। তারা গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এ ঘটনায় শিক্ষকরা দুটি গ্রম্নপে বিভক্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিতেন্দ্র নাথ বর্মণ। তিনি বলেন, 'আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির কিছু শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। অভিযোগগুলো মিথ্যা, আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।'

তিনি আরও বলেন, 'শিক্ষকরা ক্লাসে ঠিকমতো যান না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, 'উভয় পক্ষ থেকে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। আমি ম্যানেজিং কমিটির মিটিং আহ্বান করতে বলেছি। মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে