সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, তাদের উপশানলয় ভাঙচুর, ভিন্নমতের লোকদের ওপর হামলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, ঘর-বাড়িতে হামলা এবং সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদে ও এসব না করতে আহ্বান জানিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল এবং সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আঞ্চলিক অফিস, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-
বরিশাল অফিস জানায়, বরিশালে সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বরিশাল বিএম কলেজে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে বেলা ১১টায় বরিশাল বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনের সমন্বয়করা। সেখানে ছিলেন সমন্বয়কদের উপদেষ্টা বিএম কলেজের শিক্ষক ড. জাহাঙ্গীর কবির, একই কলেজের শিক্ষার্থী আন্দোলনের সমন্বয়ক মহিউদ্দিন, লাবন্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সিরাজুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, পুলিশ প্রসঙ্গে নরসিংদীর ছাত্র সমাজের সমন্বয়করা বলেন, সব পুলিশ খারাপ না, যারা প্রকৃত দোষী শুধু তাদেরই খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া নরসিংদীতে ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের যেসব ব্যক্তি হামলা করেছে, গুলি চালিয়েছে তাদেরও তালিকা তৈরি করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার নরসিংদী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এ দাবি জানায়। এসময় সমন্বয়কদের মধ্যে ছিল তাজরিয়ান পৌষন ভূইয়া, সনো সায়েদ সোহান, জান্নাতুল মালিহা, সাজীম ফারাজী প্রমুখ।
সমন্বয়করা জানান, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বে না। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু মানুষের বাড়িঘর এবং সব ধর্মীয় মন্দির উপাসনালয়ে কোনো সন্ত্রাসী যেন হামলা-ভাঙচুর করতে না পারে সেজন্য রাতে পাহারা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল জানান, টাঙ্গাইল জেলার আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য, মেয়র, চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধি এবং দলের যেসব নেতা দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন সোমবার রাতেই তারা আত্মগোপণে চলে গেছেন। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তারদের কাউকে শহরে দেখা যায়নি। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রাতের মধ্যে তাদের পরিবারসহ টাঙ্গাইল ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় বেঁধে দেয়। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে হুশিয়ারী দেয় আন্দোলনকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইমরান কবির, কামরুল ইসলাম, আল আমিন, আকরাম হোসেন, নবাব আলী প্রমুখ।
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের বকশীগঞ্জে রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর ও লুটতরাজ না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় বকশীগঞ্জ সরকারি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধান সমন্বয়কারী ও ৪ সহ-সমন্বয়কারী।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান সমন্বয়কারী শাহরিয়ার আহাম্মেদ সুমন বলেন, 'আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে শেখ হাসিনা সরকারকে হটিয়েছি। কিন্তু একটি মহল আমাদের অর্জনকে মস্নান করতে রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা করছে। যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমরা সকলকে উদাত্ত আহ্বান জানাই কেউ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর ও লুটতরাজ করবেন না।' তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সহ-সমন্বয়কারী লাদেন আকন্দ, সহ-সমন্বয়কারী আমির হোসেন, সহ-সমন্বয়কারী সাকিব হাসান ও সহ-সমন্বয়কারী খন্দকারসহ অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।