ভৈরবে রেস্টুরেন্টে আগুন তিনজন নিহত
আশাশুনিতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ নিহত ৯, আহত ১২
প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
শেখ হাসিনার পদত্যাগ-পরবর্তী সহিংস ঘটনায় সাতক্ষীরার আশাশুনিতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন। এদিকে, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি রেস্টুরেন্টে বিক্ষুব্ধদের দেওয়া আগুনে পুড়ে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, শেখ হাসিনার পদত্যাগ-পরবর্তী সহিংস ঘটনায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও ১০-১২ জন। সোমবার বিকাল থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের নাকনা গ্রামে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাকনা গ্রামের মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে শেখ জাকির হোসেন (৫৩), একই গ্রামের শেখ শাহাজুর রহমান সাজুর ছেলে শেখ শাকের (২২), মৃত শেখ সুজাত আলীর ছেলে শেখ জাহাঙ্গীর (৪৮), মৃত শেখ আরিফুল ইসলামের ছেলে শেখ আশিক (৩৩), লস্করী খাজরা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে শাহিন আলম (২২), একই গ্রামের শেখ আজুয়ার রহমানের ছেলে সজীব (২২), কুড়িকাউনিয়া গ্রামের ওয়ারেজ আলী মোড়লের ছেলে হাফেজ আনাজ বিলস্নাহ (২১) ও একই ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের নুর হাকিম ঘোরামীর ছেলে আদম আলী (২৩) ও হিজলিয়া গ্রামের ছাত্তার সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেন (১৬)। এছাড়াও গুলিবিদ্ধ আহতদের কয়েকজনকে সাতক্ষীরা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রতাপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী বলেন, বিকাল পৌনে ৫টার দিকে কয়েকশ' লোক মিছিল নিয়ে নাকনা গ্রামের জাকির চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তার বাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়ে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে তিনি (জাকির) বাড়ির দোতলা থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১০-১২ জন আহত হন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়ি ঘেরাও করে। এদিকে আহতদের চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আনাজ বিলস্নাহ, আদম আলী ও আলমগীর মারা যান। পরে তাদের মরদেহ গ্রামে ফিরিয়ে আনলে বিক্ষুব্ধরা জাকিরের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে রাত পৌনে ৮টার দিকে তারা জাকিরের বাড়িতে ঢুকে তাকেসহ তার সঙ্গে থাকা শাকের, জাহাঙ্গীর, শাহিন আলম, সজীব ও আশিককে কুপিয়ে মেরে ফেলে। এ সময় বাড়িতে থাকা জাকিরের স্ত্রী ও মেয়েদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
চেয়ারম্যান দাউদ ঢালী আরও বলেন, মরদেহগুলো শনাক্ত করা হয়েছে। আশাশুনি থানার ওসির নির্দেশে মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জান্নাত রেস্টুরেন্টে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে তিনজনের অগ্নিদগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন মহিলা, একজন পুরুষ ও একটি শিশু রয়েছে। নিহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। গত সোমবার বিকেলে রেস্টুরেন্টে দুর্বৃত্তরা আগুন লাগায়। রেস্টুরেন্ট মালিক ভৈরব পৌরসভার কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন মিন্টু। ধারণা করা হচ্ছে আগুন দেওয়ার আগে নিহতরা খাবার খেতে ভিতরে যান।
রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার রাকিব হোসেন বিলস্নাল বলেন, বিকালে একদল দুর্বৃত্ত আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে রেস্টুরেন্টটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। মঙ্গলবার দুপুরে তিনতলা থেকে ২টি ও নিচতলা থেকে একাটি সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া লাশ স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করেছে। তাদের নাম ও পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।