ডোমারে পতিত জমিতে আউশ বীজ উৎপাদন
প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি
ডোমার ভিত্তি বীজআলু উৎপাদন খামারে পতিত থাকা ৩০০ একর জমিতে আউশ ধানবীজ উৎপাদন করা হচ্ছে। খামারে বীজআলু উৎপাদনের পর বেশিরভাগ জমি একেবারেই পতিত পড়ে থাকত। আর এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে স্বল্পমেয়াদি ব্রিধান-৯৮ ধানবীজ উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে উৎপাদন কর্মসূচিতে মোট ৩৯০ মে.টন ধানবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
বীজআলু চাষের উপযোগী জমির মধ্যে বীজ আলু উৎপাদনের পর পরবর্তী বছর বীজআলু উৎপাদনে মাটিবাহিত রোগ যথাযথ ভাবে নিয়ন্ত্রণ, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি, মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি, জমি লেভেলিং, আগাছা নিয়ন্ত্রণসহ সর্বোপরি জমির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য চলতি উৎপাদন মৌসুমে ৩০০ একর জমিতে ব্রিধান ৯৮ জাতের আউশ ধানবীজ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। এই উৎপাদন কর্মসূচিতে মোট বীজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯০ মে.টন। এই উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশে আগামী মৌসুমে ৩৯ হাজার একর জমি আউশ ধান চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে। যা থেকে জাতীয় পর্যায়ে প্রায় ৬৫ হাজার মে.টন ধান উৎপাদনে যোগ হবে। ব্রিধান-৯৮ জাতের আউশ ধানের উলেস্নখযোগ্য বিষয় হচ্ছে চারা রোপণের পর থেকে মাত্র ৮০ দিনেই ফসল সংগ্রহ করা যায়। অর্থাৎ ধান থেকে ধান উৎপাদনে মোট সময় লাগে ১০৩ থেকে ১০৫ দিন।
ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারে বীজ আলু উৎপাদনের পর বেশিরভাগ জমি একেবারেই পতিত পড়ে থাকে। খামারের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু তালেব মিঞা যোগদানের পর পতিত থাকা জমিতে ধানবীজ উৎপাদনের উদ্যোগ নেন। এরই আলোকে ২০২০-২১ উৎপাদন মৌসুমে ১৮৭ একর, ২০২১-২২ উৎপাদন মৌসুমে ২৪০ একর এবং ২০২২-২৩ উৎপাদন মৌসুমে ২৫৫.০০ একর এবং চলতি উৎপাদন মৌসুমে ৩০০ একর জমিতে আউশ ধানবীজ উৎপাদন করা হয়।
৫১৫ একর জমির উপর নির্মিত ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারে গিয়ে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও পাকা ধান কাটা হচ্ছে। আবার অনেক ধান ক্ষেতে ধানের শীষ বেড়িয়েছে। আবার কিছু কিছু ধানক্ষেত সবুজের সমারোহ ছড়াচ্ছে। এই খামারে বর্তমানে ধানবীজ উৎপাদন কার্যক্রম শতভাগ যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে চলমান রয়েছে। রাইস সিডিং মেশিন দ্বারা সিডিং ট্রে ব্যবহার করে আউশ ও আমন ধানবীজ বপণ করা হয়েছে। চারা রোপণের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর রাইস ট্রান্সপস্নান্টার মেশিন দ্বারা ৩০০ একর জমিতে আউশ রোপণ করা হয়েছে। পরিশেষে কম্বাইন হার্ভেস্টার দিয়ে ধানবীজ ফসল সংগ্রহ করে দানা শস্য গ্রেডিং মেশিন দ্বারা ধানবীজ যথাযথভাবে গ্রেডিং করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
\হখামারের জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনে অত্র খামারটি জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বিশ্বায়নের এই যুগে কৃষিই হোক দেশেরে র্অথনীতির মূল চালিকা শক্তি এরই ধারাবাহকিতায় কাজ করে যাচ্ছে বিএডিসি'র অন্যতম ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামার। এর আগে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়াতে ২০০একর জমিতে ধৈঞ্চা চাষ করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ১৭ মণ ধান উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
খামারের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবু তালেব মিঞা জানান, বীজ আলু উৎপাদনের পর বেশ কিছু সময় জমিগুলো পতিত থাকে। এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প মেয়াদি আউশ ধান আবাদ করা হচ্ছে। যা ইতিমধ্যে কর্তন করা শুরু হয়েছে।
বর্তমানে কৃষক পর্যায়ে রবি মৌসুমে অন্যতম লাভজনক শস্য ভুট্টা চাষ করা হয়। ভুট্টা চাষের পরে আমন রোপণের পূর্ব পর্যন্ত জমি পতিত পড়ে থাকে। এই সময়টাতে ব্রিধান-৯৮ জাতের আউস ধান আবাদ করা সম্ভব হবে। এসময় জমি পতিত না রেখে মাত্র ৮০ দিনের ব্যবধানে আউশ (ব্রিধান ৯৮) এর চাষ করে প্রতি বিঘায় ১৫-১৭ মণ ধান উৎপাদনের পরে স্বল্পমেয়াদি আমন ধানসহ আলু উৎপাদন করা সম্ভব। ব্রিধান-৯৮ অত্যন্ত স্বল্পমেয়াদি হওয়ায় কৃষকরা খুব সহজেই একই জমিতে তাদের সুবিধামত এবং কাঙ্খিত বিভিন্ন ফসল চাষ করে অধিকভাবে লাভবান হতে পারবেন।