এখনো কেউ পায়নি আর্থিক সহায়তা
কুশিয়ারায় দীর্ঘস্থায়ী বন্যার ক্ষতচিহ্ন পাঁচ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীর পানি কমে গেলেও ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে প্রায় ৫ কোটি টাকার। গত রোববার নদীর রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর ও বেড়কুড়ি এলাকায় গেলে এমন চিত্র ফুটে ওঠে। এ সময় নদী পাড়ের খেটে খাওয়া ও দিনমজুররা জানান, দীর্ঘ প্রায় ৩ মাস ধরে লাগাতার বন্যার পানির অনেকটা উন্নতি হলেও তাদের ঘরের বেড়া, দরজাসহ মূল্যবান অনেক কিছু বানের পানিতে ধসে পড়েছে। এসব ঘরবাড়ির বহু জায়গা থেকে নদীতে পানি নিষ্কাশন না হওয়াতে চারদিকে পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা নানা রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এলাকার বহু মানুষ আরও জানান, এই বন্যায় কুশিয়ারা পাড়ের মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার ৪ ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার কাঁচা স্থাপনা নষ্ট হয়েছে। সরেজমিন থেকে শাহাপুর গ্রামের সুরমান আলীর স্ত্রী এলেজা বেগম, আলী আমজাদ, শিবলি মিয়া ও ক্যানসারে আক্রান্তের ভাই দিনমজুর তাহিদ আলী বলেন, দীর্ঘদিনের লাগাতার বন্যায় তাদের কাঁচা ঘরগুলোর দরজা, বেড়া ও অন্যান্য জিনিসপত্র ধসে পড়েছে। এতে তারা মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
স্থানীয়রা আরও বলেন, কুশিয়ারা পাড়ের উত্তরভাগ, ফতেপুর, মনুমুখ ও আখাইলকুড়া ইউনিয়নে নদী পাড়ে প্রায় ১ হাজার ঘরবাড়ির এরকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদিকে স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও একাধিক ব্যক্তি বলেন, এই ক্ষতস্থানগুলো দেখতে বা সহায়তা করতে নদী পাড়ে এখনো কোনো জনপ্রতিনিধি আসেননি।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কুশিয়ারা পাড়ের খলিলপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রাজন আহমদ বলেন, তার ওয়ার্ডে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ২শ' পরিবার রয়েছে। ক্ষতি পোষাতে এখনো সরকারিভাবে কোনো সাহায্য আসেনি।
নদী পাড়ের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউপি সদস্য এমদাদুল হক টিটু বলেন, তার ওয়ার্ডে ৬৩০ পরিবার বন্যায় সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ঘরবাড়ি মেরামতে এখনো কেউ সরকারি সহায়তা পাননি। একই উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ওলিউর রহমান বলেন, তার ওয়ার্ডে ৫০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের কেউ কোনো সহায়তা পাননি।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন চৌধুরী বলেন, কুশিয়ারা নদী পাড়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার জন্য সরকারি সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে আমরা একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। সহায়তা এলে তাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।