বৃষ্টিতে ভিজতে কার না ভালো লাগে। বৃষ্টির পানি জমে থাকা মাঠে ফুটবল খেলার মজাই আলাদা। সে মজায় মেতেছে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গ্রামের দামাল ছেলেরা। বৃষ্টি নামলেই ফুটবলপ্রেমীদের মনে নামে আনন্দের বৃষ্টির খেলা। শ্রাবণের মুষল ধারায় এই বৃষ্টি, এই রোদ, আবার ভারী বৃষ্টি, কখনো হালকা কখনো ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলে উপজেলার গদাইপুর মাঠে খেলা হবে। যারা নিয়মিত খেলে না, তারাও খেলবে। কে ভালো খেলে আর কে খারাপ, তা দেখার নেই। সবাই দল বেঁধে হৈ-হুলেস্নাড় করে বৃষ্টিতে মাঠে নামবে, গায়ে কাঁদা মাখবে, পানি ছিটাবে, গড়াগড়ি করবে। ছোটবড় সবাই মিলিয়ে যেন বাঁধ ভাঙা আনন্দ সবার মনে।
সারাদিনই চলে ফুটবল খেলা। বৃষ্টিভেজা মাটির গন্ধে তারা খেলেছে ফুটবল। দুই দলে বিভক্ত হয়ে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে গোলবারে ফুটবল নিয়ে যাচ্ছে। একে অপরকে টেনে ধরছে। কেউ বা আবার মাটিতে আছড়ে পড়ছে। এক দলের খেলা শেষ হলে অন্যদল নেমে পড়ে মাঠে। অপেক্ষায় থাকে অন্যদল মাঠে নামার জন্য। খেলার মাঠের বিরাম নেই। ভোর থেকে ১১টা পর্যন্ত বড়দের খেলা চলে। এ সময় অপেক্ষায় থাকে ছোটরা কখন বড়দের খেলা শেষ হবে। ছোটরা মাঠে তেমন সুযোগ না পাওয়ায় দুপুর বেলায় মাঠে খেলতে নেমে পড়ে। আর বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বড়দের খেলা চলে। খেলায় মেতেছে স্থানীয় ফুটবলপ্রেমী ও সৌখিন খেলোয়াড়রা। এলাকা ছাড়াও বাহির থেকেও গাড়িতে করে গদাইপুর মাঠে ফুটবল খেলার জন্য ভিড় জমাচ্ছে। মাঠে আসার যোগাযোগব্যবস্থা খুব ভালো। ঐতিহ্যবাহী গদাইপুর মাঠটি মেইন সড়ক সংলগ্ন হওয়ায় সবার কাছে আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
খেলোয়াড়দের পাশাপাশি এলাকার ক্রীড়ামোদিরা বৃষ্টি ভেজা মাঠে কাদামাটিতে ফুটবল খেলার আনন্দ উপভোগ করছে। দেখে মনে হবে, এই আনন্দের শেষ নেই। গ্রামের মাঠে বৃষ্টিতে ফুটবল খেলার অপর নাম কাদায় কুস্তি খেলা। বছরের অন্য সময় তেমন একটা খেলাধুলা না হলেও বর্ষা মৌসুমে গদাইপুর মাঠের জৌলুস ফিরে আসে। ফুটবল ক্রীড়ামোদিরা পানি কাদায় পড়ে খেলোয়াড়দের কাদা মাখামাখি হয়ে ফুটবল খেলা দেখার জন্য মাঠে ভিড় জমাচ্ছে। বিকালে বৃষ্টিভেজা মাঠে কাদামাটিতে ফুটবল খেলার আনন্দ উপভোগ করতে প্রচুর দর্শকের সমাগম ঘটে।