বর্ষায় ছাতা মেরামতকারীদের কদর বেড়েছে। তাদের দোকানে লাইন দিয়েও কাজ করতে হচ্ছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সব হাট-বাজারে এদের চাহিদা রয়েছে। সাধারণত বৃষ্টি হলে ভিড় বেশি দেখা যায় ছাতা মেরামতকারীদের দোকানে। এছাড়া বেশি রোদ হলেও অনেকে ছাতা ব্যবহার করে থাকেন।
উপজেলার নকিপুর হাট-বাজারে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ৭ থেকে ৮ জন ছাতা মেরামতকারীর দোকানে ভিড় লেগেই আছে। তবে যাদের চাহিদা বেশি, সেখানে ভিড়ও বেশি। আবার অনেকে কাজের চাপের কারণে ছোট ছোট কাজ করছেন না। আবার কাজের চাপের কারণে ছাতা মেরামতকারীর দোকানে সিরিয়াল মেনটেইন করতে হচ্ছে।
নকিপুর বাজারে ছাতা মেরামতকারী আবুল হোসেন বলেন, তিনি চলিস্নশ বছর ধরে ছাতা মেরামতের কাজ করছেন।
এই কাজটার ওপরেই সংসার চলে। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি বেশি হলে কাজের চাপ বেড়ে যায়। লাইনে লোক থাকে ছাতা মেরামত করার জন্য। ছোট ছোট কাজ তিনি করার সময় পান না। ছাতার ত্রম্নটি অনুপাতে টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করে থাকেন।
তবে তিনি বলেন, মেরামতের মজুরি হিসাবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা নিয়ে থাকেন। আর ছাতায় নতুন কোনো কিছু লাগানো হলে তার দাম পৃথকভাবে পরিশোধ করতে হয়। দৈনিক ছাতা মেরামত করেন ৩০ থেকে ৪০টি।
ছাতা মেরামত করতে আসা নকিপুর গ্রামের শাহিনুর ইসলাম বলেন, 'ছাতা দিয়ে লাইনে আছি, তার হাতের কাজ শেষ হলে আমার ছাতায় হাত দেবেন বলে জানিয়েছেন।'
নকিপুর বাজারের ছাতা মেরামতকারী সোনামুগারি গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি প্রতি হাটবারে রাসেল স্কয়ারের সামনে বসেন। এখানে প্রতি হাটবার ৩০ থেকে ৪০টি ছাতা মেরামত করেন। তিনি ছোট-বড় সব ধরনের কাজ করেন। মজুরি হিসাবে সর্বনিম্ন ১০ টাকা আর ছাতার ত্রম্নটি অনুযায়ী ৪০ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে থাকেন। বহুদিন যাবৎ এ পেশার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বলে জানান।
শ্যামনগর ডাকবাংলো মোড়ে ছাতা মেরামতকারী আব্দুল জানান, তিনি এক ছাতা মেরামতকারীর সঙ্গে চাবি ঠিক করেন। মূল পেশা ছাতা মেরামত করা। বহুদিন ধরে এ পেশায় জড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন বর্ষা হলে কাজ বেশি হয় আর রৌদ বেশি হলে কাজ হয়। ছাতার কিছু নতুন মালামালও রেখেছেন, প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করেন। সেক্ষেত্রে উপকরণের দাম ছাড়াও মজুরি আলাদা নিয়ে থাকেন। দৈনিক ৪০ থেকে ৫০টি বা তার কম কোনো সময়ে ছাতা মেরামত করেন। তিনি বলেন, বর্ষা হলেই তাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়, সিরিয়াল মেনটেইন করতে হয়।
এদিকে ছাতা ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষাকালে তাদের ছাতা বিক্রি বেড়ে যায়। পূর্ণিমা কসমেটিকসের মালিক গিরিন্দ্র বলেন, বর্ষাকালে ছাতা বেশি হয় এবং এ সময়ে বিভিন্ন ডিজাইনের ছাতা তারা দোকানে বিক্রির উদ্দেশে মজুত রাখেন।
প্রিন্স ভ্যারাইটি স্টোরের মালিক জানান, বর্ষাকালে ফল্ডিং ছাতা বেশি বিক্রি হয়। এই ছাতার মূল্য তিনশ' পঞ্চাশ বা চারশ' টাকা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কোম্পানির ছাতার মূল্য ভিন্ন রকমের।