অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
জামালপুরের বকশিগঞ্জে দুষ্কৃতকারীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া পুলিশের গাড়ি -যাযাদি
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে সারাদেশ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতা। রোববার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর- মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুর সরকারি কলেজ মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে ছাত্র হত্যার বিচার ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন সেস্নাগান দিতে থাকে ছাত্ররা। মিছিল শেষে সরকারি কলেজ মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্রদের নয় দফা দাবিতে বক্তব্য রাখেন তারা। মিছিল ও সমাবেশ ঘিরে পুলিশের কঠোর নজরদারি থাকায় কোনো সহিংস ঘটনা না ঘটলেও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীর ডোমারে বেলা ১১টা থেকে ডোমার হাইস্কুল মাঠে জড়ো হতে থাকেন ছাত্রছাত্রীরা। এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মিছিলটি থানা মোড়, বাটার মোড়, মুছির মোড় হয়ে উপজেলা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শহরের সব দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও ডোমারে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি পালিত হয়নি। রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌর শহরের শিবদিঘী মিনি স্টেডিয়ামে ছাত্র-জনতা জড়ো হয়ে বিকাল ৩টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। অপর দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা লাঠি হাতে নিয়ে একটি মিছিল শিবদিঘী অভিমুখে যাওয়ার পথে মুক্তা সিনেমার সামনে দুটি মিছিল একত্রে মিলিত হয়। এ সময় শহরের সব দোকানপাট ভাঙচুর আতঙ্কে বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন সেস্নাগান দেয়, অপরদিকে নেকমারদ উপশহরে মিছিল ও বিক্ষোভ চলছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের এ দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন তারা চালিয়ে যাবেন। নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও নতুন বাজার মোড় আব্দুল মতিন স্কয়ারে অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান করে সেস্নাগান ও গানে গানে মাতিয়ে রাখে নতুন বাজার মোড়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ ছিল সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে। এ সময় সমন্বয়ক ছাত্রদল নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, পারভেজ আহমেদ সোহাগ বক্তব্য রাখেন। তারা বাহুবল থানায় গায়েরি মামলায় কয়েকজন ছাত্র নেতাদের আসামি করার নিন্দা জানান। থানার ওসি মাসুক আলী জানান, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই তাদের কর্মসূচির পরিসমাপ্তি হয়। পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার হারুন অর রশিদ কলেজ থেকে মিছিল বের হয়ে কুমিরা বাজার প্রদক্ষিণ কলেজের সামনে এসে শেষ হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা মিছিলে শিক্ষার্থীসহ কয়েকশ' সাধারণ মানুষ অংশ নেয়। সাধারণ মানুষসহ শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া সেস্নাগান দিতে থাকে। পাটকেলঘাটা থানার ওসি বিপস্নব কুমার নাথ বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ মাঠে রয়েছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় পুলিশ জনগণের পাশে আছে সবসময়। সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার সোনাতলা সরকারি মডেল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বিভিন্ন সেস্নাগান লেখা পোস্টার নিয়ে ছাত্ররা জমায়েত হওয়া শুরু করে। এ সময় সোনাতলা থানা অফিসার ওসি ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, 'সোনাতলায় কোনো অশান্তি বিরাজ করছে না। আমরা সবাই শান্তিপ্রিয়। আমারা শান্তি বজায় রাখতে চাই। পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা আন্দোলন স্থগিত করে ছত্রভঙ্গ হয়।' পরে তারা সোনাতলা মিনি স্টেডিয়াম থেকে স্টেশন রোড ভায়া রেল গেইট থেকে গাজীপস্নাজা মোড় এবং ঘোড়াপীর মোড় থেকে বাজারের মধ্য দিয়ে সোনালী ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন সেস্নাগান দেয়। সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোডে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। কয়েকশ' শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে মহাসড়কে উঠে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা এক দফা দাবিসহ সরকারবিরোধী নানা সেস্নাগান দেন। বেলা সাড়ে ১১টার সময় আওয়ামী লীগের একটি মিছিল কুট্টাপাড়া মোড়ে আসলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের ২০ জন কর্মী আহত হয়েছেন। এদিকে মহাসড়কের অবস্থান নেওয়ার কারণে উভয়পাশে যান চলাচল বন্ধ ছিল। আন্দোলনকারীরা জানান, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আন্দোলন চলাকালে যেকোনো সহিংসতা এড়াতে মোতায়েন ছিল পুলিশ ও বিজিবি। পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন জানান, বিক্ষোভ মিছিলকে ঘিরে কোনো বিশৃঙ্খল পরিবেশ এড়াতে পুলিশ তৎপর ছিল। জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর হাসপাতাল গেট থেকে 'আমার সোনার বাংলায়, স্বৈরাচারের ঠাঁই নাই'- সেস্নাগান দিয়ে ছাত্ররা গুরুত্ব সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে জীবননগর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের খানসামার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পাকেরহাট সেস্নাগানে উত্তাল, শক্ত অবস্থানে ছিলেন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা। রোববার সকাল থেকে উপজেলার পাকেরহাট শাপলা চত্বরে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এরপর ১১টায় বিক্ষোভ মিছিল পাকেরহাট শাপলা চত্বর থেকে বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এই সময়ে দোকানপাট বন্ধ ছিল। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা সড়কে অবস্থানের সময় পাকেরহাটের মূল সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহনগুলো অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে দেখা যায়। তবে খানসামা উপজেলায় কোনো সংঘর্ষ বা কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম বলেন, সারাদেশের মতো শান্তিপ্রিয় খানসামা উপজেলায়ও কোটা আন্দোলন হচ্ছে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানা পুলিশ সর্বদা সজাগ আছে। ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও যোগ দেন। রোববার বিকালে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের রাণীগঞ্জ সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্স্নোগান দিয়ে শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে রাণীগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা সরকার প্রধানের পদত্যাগ দাবিসহ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দ্রম্নত হত্যার বিচার দাবি করেন। এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজারে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের সদস্যরা সজাগ ছিলেন। বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের বকশীগঞ্জে এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ভাঙচুর, হাইওয়ে থানার পিকআপ ভ্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে করে থম থমে অবস্থা বিরাজ করে পুরো উপজেলায়। পুরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিআর সেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। জানা গেছে, আন্দোলনকারীরা দুপুর ১২টায় বকশীগঞ্জ এনএম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে মালিবাগ মোড়ে গিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর শেষে উপজেলা পরিষদের সমবায় কার্যালয়, যুব উন্নয়ন কার্যালয়, আইসিটি দপ্তর ও পাট অধিদপ্তরে ব্যাপক হামলা চালানো হয় এবং ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়ে দেয়। বকশীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৬ রাউন্ড টিআর সেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঢাকার ধামরাইয়ের কালামপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হলে ছাত্র-জনতা ধাওয়া দেন তাদের। অবস্থা খারাপ হলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা পাশের করিম ফিলিং স্টেশনে পালানোর চেষ্টা করে। এতে উত্তেজিত বিক্ষুদ্ধরা ওই পাম্প ভাঙচুর করে। আর পুলিশ দ্রম্নত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীর সৈয়দপুরে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন হাজার-হাজার শিক্ষার্থী-জনতা রাজপথ দখলে রাখে। হাজার-হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হতে থাকে সৈয়দপুর শহরের সাত বীরশ্রেষ্ঠ চত্বরে। সমবেত শিক্ষার্থীদের সবার মুখে ছিল এক দফার স্স্নোগান। পরে বিশাল মিছিল বের করে শহর অতিক্রম করে স্মৃতি অম্স্নান চত্বরে সমাবেশ করে। এ সময় পুলিশ মিছিলে কোনো ধরনের বাধা দেয়নি। দুপুরের পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে যেতে থাকলে কিছু নেতাকর্মী তাদের লাঠিসোঠা দেখালে আন্দোলনকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে তারা আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ছুড়লে প্রায় বেশ কয়েকজন আহত হন। ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে বলে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহা আলম নিশ্চিত করেছেন। ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার কলেজ মোড়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মজিব চত্বরে সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলন চলবে। সকল জনসাধারণকে রাস্তায় মেনে আসার জন্য আহ্বান জানান। পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তাবাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা জনগণের সেবক, আপনারা জনগণের পাশে থাকবেন। এই সরকারকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। আপনারা সরকারকে সমর্থন না দিয়ে জনগণকে সমর্থন দিন। চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি জানান, যশোরের চৌগাছায় জনজীবন স্বাভাবিক থাকলেও উপজেলার কোনো রুটে যাত্রীবাহী বাস চলেনি। সড়কে শুধু রিকশা, ভ্যান ও সিএনজি চলতে দেখা গিয়েছে। গণপরিবহণ সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রী, জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ, হাসপাতালগামী রোগী ও স্বজনরা। অসযোগ আন্দোলনকারীদের পক্ষে উপজেলায় কোনো মিছিল সমাবেশ করতে দেখা যায়নি। সকাল থেকেই উপজেলার প্রধান পাঁচটি রুটে কোনো প্রকার যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। উপজেলার ব্যাংকগুলোতে গ্রহকের উপস্থিতি কম ছিল। চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, উপজেলায় কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের বীরগঞ্জে থানায় হামলা এবং ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালানোর পর আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর পুরো এলাকা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করলেও হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন রোববার সকাল ১১টায় বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা। এরপর মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং পুরো শহর চলে যায় আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে। শত শত শিক্ষার্থীদের মিছিল আর সেস্নাগানে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো শহর। দুপুরে নামাজের বিরতির জন্য কর্মসূচি স্থগিত করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা। কিন্তু দুপুর আনুমানিক ২টায় একদল যুবক লাঠিসোটা নিয়ে হঠাৎ করে বীরগঞ্জ থানায় হামলা চালিয়ে দুইটি পুলিশ পিকআব, একটি মোটর সাইকেলসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। বীরগঞ্জ থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, 'বিনা উসকানিতে থানায় হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের কাছে এটি পূর্ব পরিকল্পিত মনে হয়েছে। শান্তিপ্রিয় বীরগঞ্জকে অশান্ত করার চক্রান্তে আমরা মর্মাহত।' আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আন্দোলনকারী ও সরকার সমর্থিতদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়েছে। রোববার সকাল ১০টার দিকে আখাউড়া রেল স্কুল বাইপাস এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে রেলস্কুল বাইপাস এলাকায় বিপুল সংখ্যক যুবক রেললাইন ও সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় কিছু নারী শিক্ষার্থীকে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীরা আখাউড়া-সিলেট রেলপথের রেলওয়ে কলোনি এলাকায় রেললাইনে বসে পড়ে। এ সময় তারা এক দফা এক দাবিসহ বিভিন্ন স্স্নোগান দেয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পূর্ব কলোনি এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।