আড়াইহাজারে শ্বশুরবাড়িতে জামাতাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ
দরজা চাপা, সাপের কামড় ও আত্মহত্যায় আরও ৩ মৃতু্য
প্রকাশ | ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে জামাতাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, মাদারীপুরের শিবচরে লোহার দরজা চাপা পড়ে পাহারাদারের, ময়মনসিংহের ভালুকায় সাপের কামড়ে ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ারের ও পাবনার আটঘরিয়ায় বিষ পানে গৃহবধূর মৃতু্য হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট-
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে প্রবাস ফেরত জামাতা বেলায়েতকে (২৭) হত্যা করে ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী রিদু আক্তার (২৩) ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলার গোপালদী পৌরসভার দাইরাদী এলাকায়। নিহত বেলায়েত উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদী গ্রামের হাজী আফাজউদ্দিনের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলায়েতের লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো এবং তার হাঁটু পর্যন্ত খাটের উপরে ভাঁজ করা অবস্থায় রয়েছে। নিহতের বড় বোন রাজিয়া জানান, মাত্র ১৫-২০ মিনিট আগে বেলায়েতের স্ত্রী রিদু তাকে ফোন করে শ্বশুরবাড়িতে আসতে বলে। ফোন পেয়ে তরিগরি করে মোটরসাইকেল নিয়ে বেলায়েত শ্বশুরবাড়িতে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর তারা সংবাদ পান, বেলায়েত তার শ্বশুরবাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি আরও জানান, 'এটি আত্মহত্যা না, রিদু আমার ভাইকে হত্যা করার উদ্দেশে ফোন করে ডেকে এনে তার পরিবারের লোকজন নিয়ে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে।' তিনি নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে মামলা করবেন বলেও সাংবাদিকদের জানান।
নিহতের বড় ভাই বিলস্নাল হোসেন জানান, 'প্রায় দুই বছর আগে দাইরাদী গ্রামের নেতাহি মিয়ার মেয়ে রিদু আক্তারের সঙ্গে বেলায়েতের বিয়ে হয়। স্ত্রীকে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রেখে বেলায়েত মালয়েশিয়া যান। ইতোমধ্যে স্ত্রী রিদু অপর এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে বেলায়েতের বিদেশ থেকে পাঠানো সর্বস্ব নিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যান। গত ৫ মাস আগে বেলায়েত দেশে এসে স্ত্রীকে ঢাকা থেকে ফিরিয়ে এনে ফের সংসার করতে থাকেন। শুক্রবার বিকালে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে রিদু পিত্রালয়ে চলে যান। এরপর শনিবার সকালে স্বামীকে ফোন করে তার পিত্রালয়ে আনার পরপরই এ ঘটনা ঘটে।'
এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার ওসি মোহাম্মদ আহসানউলস্নাহ জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিবচর, (মাদারীপুর) প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় লোহার দরজার ভারে চাপা পড়ে কাদির হাওলাদার (৫৫) নামে এক বাজার পাহারাদারের মৃতু্য হয়েছে। শনিবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার মাদবরের চর ইউনিয়নের বেইলি ব্রিজ বাজার নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত কাদির হাওলাদার উপজেলার বাখরের কান্দি গ্রামের মৃত মোসলেম হাওলাদারের ছেলে।
জানা যায়, কাদির হাওলাদার বেইলি ব্রিজ বাজারের নিয়মিত পাহারাদার। শুক্রবার রাতে প্রতিদিনের মতো বাজার পাহারা দেন। ভোর রাতে বৃষ্টি হলে বাজারের রাসেল মিয়ার 'খলিফা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ' নামের দোকানের সামনে আশ্রয় নেন। দোকানের সামনে একটি ভারী লোহার দরজা রাখা ছিল। এ সময় দরজাটিতে নাড়াচাড়া করলে হঠাৎ করে দরজাটি তার গায়ের ওপরে পড়ে। দরজার ভারে চাপা পড়ে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান।
শিবচর থানার ওসি সুব্রত গোলদার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহের ভালুকায় বিষধর সাপের কামড়ে মিরাজ হোসেন রনি (২৬) নামে এক ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ারের মৃতু্য হয়েছে। এদিকে, ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় তিনি মারা যান বলে পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামে।
জানা যায়, উপজেলার পাড়াগাঁও গাংগাটিয়া গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ার মিরাজ হোসেন রনিকে বন্ধুর গাঁয়েহলুদ অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে বিষধর সাপে কামড় দেয়। স্থানীয়রা সিডষ্টোর বাজার বাটাজোর রোডে অবস্থিত লতিফ মেডিকেল স্টোরে ডাক্তার আশরাফুজ্জামানের কাছে নিয়ে যায়। তখন ডাক্তার জানান, সাধারণ সাপ কামড় দিয়েছে, কিছু হবে না। কিছুক্ষণ পর রনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে প্রথমে ভালুকা সরকারি হাসপাতাল ও পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই রনি মারা যান।
নিহত রনির পিতা সাহেব আলী জানান, তার ছেলেকে সাপে কামড়ালে সিডষ্টোর বাজার আশরাফ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর নাপা ও গ্যাসের ট্যাবলেট দিয়ে বলে সাধারণ সাপে কামড়িয়েছে কিছু হবে না। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তার ছেলে অজ্ঞান হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডাক্তার আশরাফুজ্জামান বলেন, তিনি বিষাক্ত সাপের কামড়ের বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তাই সাধারণ চিকিৎসা দিয়েছিলেন।
আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, এনজিওর ঋণের কিস্তির চাপ ও স্বামীর নির্যাতনে পাবনার আটঘরিয়া পৌর এলাকার কন্দর্পপুর মহলস্নার মনিরুল ইসলামের (মনির) স্ত্রী গৃহবধূ অজুফা খাতুন বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অজুফার বাবা ও ভাইয়ের দাবি, বিয়ের পর থেকে মনির ক্রমাগতভাবে স্ত্রী অজুফাকে নির্যাতন করে আসছিলেন এবং মাঝেমধ্যেই মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে আদায় করতেন। মনির প্রায় ১০-১২টি এনজিও থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ করেন। ঋণের কিস্তির টাকার জন্য সর্বশেষ গত ৩০ জুলাই স্ত্রী অজুফাকে বেদম মারধর করেন। উপরন্ত এনজিওর কিস্তির টাকার চাপে অজুফা মনের দুঃখে ৩১ জুলাই বিষ পান করেন।