বস্তায় আদা চাষে সফল নন্দীগ্রামের চাষিরা

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি
খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি করা জনপ্রিয় এক মশলাজাতীয় ফসল হলো আদা। ভেষজ গুণে ভরপুর আদা কাঁচা ও শুকনো দু'ভাবেই ব্যবহার করা যায়। তাই সারাবছর ক্রেতাদের কাছে এর চাহিদাও থাকে বেশি। বাজারে আদার চাহিদার কথা মাথায় রেখে নন্দীগ্রাম কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী নন্দীগ্রাম উপজেলায় এই প্রথম নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় এবং বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে ব্যাগিং পদ্ধতিতে বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা লাগিয়ে সাড়া ফেলেছেন নন্দীগ্রাম উপজেলার নিনগ্রামের আব্দুল করিমসহ অনেকেই। এদিকে কৃষি কর্মকর্তারা বলছে, বস্তায় আদা চাষ কম পরিশ্রমে লাভজনক একটি ফসল। এই প্রথম নন্দীগ্রাম উপজেলায় নতুন আদাচাষিরা বাড়ির উঠানে পতিত জায়গা জমিতে ১০ হাজারের অধিক বস্তায় আদার চাষাবাদ করেছে। গাছগুলোতে এখন থোকায় থোকায় গজিয়েছে আদা। একেকটি বস্তায় আড়াই কেজির বেশি আদা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা মেলে আদা চাষের প্রদ্ধতি। এ সময় চাষি আব্দুল করিম বলেন, প্রথমে তিনি ইউটিউব দেখে আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। এরপর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে আদার চাষ শুরু করেন। প্রথমেই ছাই, জৈব সার ও বালু মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করেন। পরীক্ষামূলকভাবে ৮ শতক জমিতে দুই হাজার বস্তায় মাটি ভরাট করে টবের মতো করেন তিনি। প্রতিটি বস্তায় তিন থেকে চারটি করে আদার চারা রোপণ করেন। আব্দুর করিম আরও বলেন, '৮ শতক জমিতে আদা চাষে আমার দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পেলে ৮ শতক জমি থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকার আদা বিক্রি করতে পারব।' বুড়ইল ইউনিয়নের কৃষক আল-আমিন বলেন, 'এভাবে আদা চাষে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, পতিত জমিতে খুবই সীমিত খরচ আর অল্প শ্রমে চাষ করা সম্ভব। একেকটি বস্তায় প্রায় দুই কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যাবে।' নুন্দহ্‌ গ্রামের কৃষক মাহবুব বলেন, 'এই প্রথম অল্প পরিসরে বস্তায় আদা চাষ করেছি। এ বছর যদি লাভ ভালো হয়, তাহলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে আদা চাষ করব। একটি বস্তায় চারা রোপণ করতে মোট খরচ প্রায় ৩০ টাকা। কিন্তু একেকটি বস্তায় আদা পাওয়া যাবে প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি। বর্তমানে দুই কেজি আদার বাজার মূল্য ২০০ টাকা।' অল্প খরচে বেশি লাভ বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ দেখে এলাকার অনেক মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে আদা চাষের। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, 'আদা একটি অর্থকরী ফসল। এ পদ্ধতিতে আদা চাষে জমির চেয়ে রোগবালাইয়ের আক্রমণ হয় কম। বস্তায় আদা চাষে কিটনাশক এবং পানি লাগে অনেক কম। ফলে যে কোনো স্থানে এভাবে আদা চাষ করা সম্ভব। পাশাপাশি কেউ চাইলে বাসার ছাদে, ব্যালকোনিতে এবং বাড়ির সামনে পরিত্যক্ত স্থানেও চাষ করা যায়। স্বল্প পরিসরে এ চাষের মাধ্যমে নিজেদের আদার চাহিদা মেটানো সম্ভব।'