দক্ষিণা ঝড় ও ভারী বৃষ্টি
পদ্মায় তলিয়ে গেল ১১ জেলের নৌকা
প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি
দক্ষিণা ঝড় ও ভারী বৃষ্টিতে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর জেলেদের নৌকা-জালসহ পদ্মা নদীতে তলিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রাত ২টার পর হঠাৎ করেই বৃষ্টির সাথে ঝড় বইতে শুরু করে।
এতে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মাটিকাটা দেওয়ান পাড়া এলাকায় পদ্মানদীর তীরে জেলেদের প্রায় শতাধিক নৌকা ঘাটে বাঁধা ছিল। প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ে স্রোতের কবলে পড়ে প্রায় ১৫ জন জেলের নৌকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে প্রতিটি জেলে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা হলেন, মাদারপুর দেওয়াপাড়া এলাকার সাইফুলের ছেলে আরমান ও সুরমান, আব্দুল বারীর ছেলে বাবু বাঘা, সফিকুল ইসলামের ছেলে মুরসালিন, আব্দুস সালামের ছেলে মহবুল ইসলাম, নইমুদ্দিনের ছেলে সাব্বির হোসেন, আতার উদ্দিনের ছেলে সুমন আলী, সেফান আলীর ছেলে মূলক চাঁন ও সাহাবুল, মতিউরের ছেলে কবির হোসেন ও শুকুরুদ্দীনের ছেলে কামাল উদ্দিন।
দেওয়ান পাড়া এলাকার জেলে জামাল উদ্দীন জানান, 'আমার জেলে জীবনে কোন বছর এমন পানি ও দক্ষিণা ঝড় দেখিনি। তবে এবার প্রচন্ড বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে নদী তীরে বাঁধা প্রায় ১৫টি নৌকা তলিয়ে গেছে। সকালে নদী তীরে এসে দেখি নৌকা গুলো নেই। পরে যেখানে নৌকা বাঁধা ছিল সেখানে পানির নিচে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। ধারণা করা হচ্ছে স্রোতের তীরে ভেসে গেছে যা আর পাওয়া সম্ভব না।'
জেলে আরমান আলী বলেন, '২০ ফিটের প্রতিটি নৌকা তৈরিতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ওপর খরচ হয়। এ ছাড়াও জেলেরা ২০-৪৫ হাজার টাকা দামের বিভিন্ন ধরনের জাল, স্যালোইঞ্চিনসহ নৌকার আনুসঙ্গিক খরচসহ প্রতিটি জেলের দুই লক্ষাধিক টাকার খরচ হয়েছে, যা জেলেদের নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠা খুব মুশকিল।'
জেলে মুরসালিন বলেন, 'আমরা এনজিও থেকে কিস্তি নিয়ে ও মহাজনদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে নৌকা-জাল বানিয়ে এই বর্ষা মৌসুমে নদীতে মাছ ধরতে যাই। অন্যান্য সময় নদীতে মাছ তেমন পাওয়া না গেলেও এই মৌসুমের অপেক্ষায় থাকি।
এই মৌসুমে বেশি মাছ পাওয়ায় সারা বছরের ইনকাম কোন রকম হয়। তবে হঠাৎ এই ঝড়ে নৌকাগুলো হারিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। মাথায় এখন চিন্তা কি করে কিস্তি চালাব ও মহাজনদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা পরিশোধ করব।
সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো সহযোগিতা পাওয়া যেত তাহলে আমাদের কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব হতো।'
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বরুণ কুমার মন্ডল বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী মাছ ধরার সময় কোনো জেলে যদি আহত হয় সেক্ষেত্রে ৩০ হাজার, নিহত হলে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার বিধান রয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। তবে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের নাম ঠিকানা দিলে কোনো সুযোগ থাকলে তা দেখা হবে বলে জানান।