দিন যতই যাচ্ছে ততই দেশে বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বজ্রপাত বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে নির্বিচারে তালগাছ কাটাকে অনেকটাই দায়ী করা হচ্ছে। প্রতিদিনই পরিবেশবান্ধব তালগাছের সংখ্যা কমছে। অথচ তালগাছই হচ্ছে একমাত্র বৃক্ষ যা বজ্রপাত নিরোধক হিসেবে কাজ করে।
এক সময় নওগাঁর বিভিন্ন সড়কের পাশে তালগাছের সারি চোখে পড়ত। কিন্তু সড়ক আধুনিকায়ন কাজের অজুহাতে কাটা পড়ছে সেসব তালগাছ। আবার সচেতনতার অভাবে গ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা কাটছেন পরিবেশবান্ধব তালগাছ। যেহেতু তালগাছ খুবই ধীরগতিতে বড় হয়, তাই আগামী প্রজন্মকে বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতি মৌসুমেই নিজেদের বসতবাড়ির পাশে, গ্রামীণ সড়ক ও মহাসড়কের পাশ দিয়ে নিজ উদ্যোগে কিংবা সরকারি অথবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বেশি বেশি করে তালবীজ কিংবা তালগাছ রোপণের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
দেশ থেকে আশঙ্কাজনকহারে তালগাছের হারিয়ে যাওয়াকে প্রতিরোধ করতেই বেশ কয়েক বছর ধরে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দেশজুড়ে তালবীজ-তালগাছ রোপণ করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় নওগাঁর রানীনগরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে রোপণ করা হচ্ছে তালগাছ। সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ঝালঘড়িয়া-চকপারইল গ্রামীণ এক কিলোমিটার সড়কের পাশ দিয়ে কৃষি বিভাগের বাস্তবায়নে ৪০০ তালগাছ রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন- উপজেলা চেয়ারম্যান রাহিদ সরদার। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন, কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা হক, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম, পারইল ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা হক বলেন, 'তালগাছকে আমরা অবহেলার চোখে দেখি। অথচ একটি তালগাছ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। উলেস্নখযোগ্য গুণ হচ্ছে তালগাছ বজ্রপাত নিরোধক। এ ছাড়া দিন যতই যাচ্ছে, ততই তাল শাঁস ও বিভিন্ন মুখরোচক পিঠা খেতে তাল ফলের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে একটি তালগাছ অনেক প্রজন্মকে ফল ও সেবা দিতে পারে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উপজেলার প্রতিটি এলাকার কৃষকদের তালগাছের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করছি।'
উপজেলা চেয়ারম্যান রাহিদ সরদার বলেন, দেশে তালগাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করতেই সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি মৌসুমেই তালগাছ রোপণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।