বগুড়ায় মসজিদে ঢুকে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় ধাওয়া খেয়ে মসজিদে আশ্রয় নেওয়ার পর রতন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলা সদরের এরুলিয়া খন্দকারপাড়ার মসজিদের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই যুবক বগুড়া সরের এরুলিয়া জিলাদার পাড়ার মৃত শাবদুল জিলাদারের ছেলে রতন জিলাদার কাবিলা (৩২)। পেশায় সে একজন মাংসের দোকানের কর্মচারী। এরুলিয়া বড় মসজিদের মোয়াজ্জিন মোহাম্মদ আসলাম হোসেন বলেন, আমি ফজরের আজান দিয়ে মসজিদের দরজা খুলে দিয়ে টয়লেটে যাই। এর মধ্যে মসজিদের বারান্দায় চিৎকার চেচামেচির শব্দ শুনতে পাই। দ্রম্নত টয়লেট থেকে বের হয়ে মসজিদের বারান্দায় রক্তাক্ত অবস্থায় এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় কোনো কিছু বুঝে উঠতে না পেরে মসজিদের মাইকে ঘটনাটি গ্রামবাসীকে জানাই। পরে গ্রামের লোকজন এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।' নিহতের মা শিরিনা বেওয়া বলেন, 'গত প্রায় ৬ বছর হলো রতন বিয়ে করেছে। বিয়ের প্রায় তিন বছর পর থেকেই রতনের জ্যাঠাতো বোনের ছেলে আরিফুল তার এক বন্ধু ও ভগ্নিপতি আমিন, রতনের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। কিছুদিন আগে আরিফুল রতনের স্ত্রীকে ধর্ষণও করেছে। এসবে বাধা দেওয়ার কারণেই রতনকে হত্যা করা হয়েছে।' এ বিষয়ে রতনের স্ত্রীর বলেন, 'গত মঙ্গলবার রাতে আরিফুল ও আমিন আমার ঘরে ঢুকতে চায়। এ সময় আমার স্বামী বাড়ি চলে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি স্বামীকে খুলে বলি। এতে আমার স্বামী ক্ষিপ্ত হতে থাকে। পরের দিন সে দেখতে পায় বাড়ির পাশের রাস্তায় আরিফুল ও আমিন বসে আছে। এ সময় একটি গাছের ডাল নিয়ে ওদের দু'জনকে মারধর করেন এবং আমরা স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে বিষয়গুলো থানাতে জানালে পুলিশ বাড়িতে আসে এবং উভয়পক্ষের কাছে বিস্তারিত শুনে আমাদেরকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার আমার স্বামী আদালতে গিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে। ওইসময় আইনজীবী আগামী রোববার আমাকে সঙ্গে করে আদালতে গিয়ে ধর্ষণ মামলা করার জন্য পরামর্শ দেন। নিহতের স্ত্রী আরও বলেন, 'আরিফুল ও আমিন বুধবার দুপুরের পর থেকে আমার স্বামীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। আজ শুক্রবার ভোরে রতন গোদারপাড়া বাজারে মাংসের দোকানে যাওয়ার সময় রতনকে তারা ধাওয়া করে। একপর্যায়ে আমার স্বামী মসজিদে আশ্রয় নিলে মসজিদের ভেতরে ঢুকেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।' এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আব্দুর রহিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে আরিফুল ও আমিনসহ আরও একজন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। ময়নাতদন্তের জন্য রতনের মরদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।'