মসজিদ নির্মাণ করে প্রশংসায় ভাসছেন জেল সুপার তুহিন কান্তি

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

মনজুর হোসেন, মাদারীপুর
মাদারীপুর জেলা কারাগারের সুপার তুহিন কান্তি খানের উদ্যোগে নির্মিত মসজিদ -যাযাদি
মাদারীপুর কারাগারে থাকা বন্দিদের স্বজন, কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকাবাসীর নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদ নির্মাণ করেছেন জেল সুপার তুহিন কান্তি খান। মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ত্রিশ লাখ টাকা। মসজিদটিতে একত্রে প্রায় আড়াইশ' মুসলিস্ন নামাজ আদায় করতে পারবে। জানা গেছে, মাদারীপুরে প্রথম কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪২ সালে। তখন কারাগারটি ছিল শহরের শকুনী লেকের পূর্বপাড়ে পুলিশ লাইনের পাশে। কারাগারটি এখন পুরাতন হওয়ায় ও আকার ছোট হওয়ায় ২০১৮ সালে মাদারীপুর শহরের পাশে ঘটমাঝি এলাকায় সাড়ে ১৩ একর জায়গার ওপর নতুন করে কারাগার নির্মাণ করা হয়। কারাগারটি বড় পরিসরে নির্মাণ হলেও মুসলিস্নদের নামাজ পড়ার জন্য কোন মসজিদ নির্মিত হয়নি। মসজিদ না থাকায় কারাগারের ব্যারাকের একটি রুমে নামাজ আদায় করত কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মুসলিস্নদের নামাজ পড়ার সমস্যার কারণে বর্তমান জেল সুপার তুহিন কান্তি খান নতুন একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং মাত্র চার মাসে চমৎকার একটি দৃষ্টি নন্দন মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদ নির্মাণের জন্য ছিল না কোন সরকারি অনুদান। প্রথমে কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যক্তিগতভাবে টাকা দিয়ে এবং নিজেরা নির্মাণ শ্রমিকদের সঙ্গে থেকে শ্রমিকের কাজ করে মসজিদ নির্মাণ শুরু করেন। জেল সুপার নিজেও বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের সঙ্গে থেকে মসজিদের ইটের গাথনির দেয়ালে পানি দেয়াসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ নিজ হাতে করেছেন। কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা কয়েকজন বলেন, 'কারাগারে আটক থাকা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে এসে দেখলাম কারাগারের প্রবেশের পূর্বেই সুন্দর একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। জানতে পারলাম হিন্দু ধর্মের মানুষ হয়েও জেল সুপার দৃষ্টি নন্দন মসজিদ নির্মাণ করেছেন। খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।' মাদারীপুর জেলা কারাগারের জেলার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, 'আমাদের কারাগারের নতুন জামে মসজিদে নামাজ আদায় করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মসজিদটি নির্মাণে সহযোগিতা করায় কারা মহাপরিদর্শক, জেল সুপার, কারাগারের স্টাফ ও এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানাই।' জেল সুপার তুহিন কান্তি খান বলেন, 'আমি এখানে যোগদানের পরে মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রথমে কারাগারের সকল স্টাফদের নিয়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেই। পরবর্তীতে কারা মহাপরিদর্শক স্যারকে মসজিদ নির্মাণের বিষয়টি জানালে স্যার আমাদের পরামর্শ ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা প্রদান করেন। মসজিদ নির্মাণের জন্য কোনো অর্থ ছিল না। আমরা শূন্য থেকে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করি।