ঘিওরে তিন নদীর ভাঙনে অর্ধশত পরিবার ঘরহারা

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালিগঙ্গা, ইছামতি ও পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর পানি কমলেও ভাঙন তীব্র রূপ ধারণ করেছে। গত দুই সপ্তাহে ভাঙনের কবলে অর্ধশত বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনকবলিত ছয়টি স্পটে ভাঙনরোধে শুরু হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকার প্রকল্পে ৪০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলাসহ অন্যান্য কাজ। ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ধলেশ্বরীর ভাঙনের কবলে উপজেলার কুস্তা, বেগুননারচী, শ্রীধরনগর গ্রামের কমপক্ষে ৮ পরিবার চালের টিন, আসবাবপত্র, গবাদি পশু নিয়ে ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। এ গ্রাম দু'টিতে গত এক সপ্তাহে ধলেশ্বরীতে বিলীন হয়েছে আরও ১২ পরিবারের বাড়ি। ভিটামাটিহারা মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন স্বজনের বাড়িতে। এদিকে উপজেলার জাবরা, তরা, উত্তর তরা ও নকীব বাড়ি এলাকার অন্তত ২০টি বসতবাড়ি, দুই কিলোমিটার রাস্তা ও ফসলি জমি কালিগঙ্গা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। ইছামতির ভাঙনের কবলে পড়েছে ২শ' বছরের প্রাচীন ঘিওর হাটের গরু হাটা অংশ, বাসুদেববাড়ি এলাকা। নদী পাড়ের এসব মানুষের দিন কাটছে ভাঙনের আতঙ্কে। কুস্তা গ্রামের প্রবীণ মনির উদ্দিন জানান, গত এক সপ্তাহে তার ২০ শতাংশ বসতভিটা ধলেশ্বরী নদীতে বিলীন হয়েছে। আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেলেও অন্তত ভিটামাটি অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু নদীর ভাঙন সবকিছুই শেষ করে দিয়েছে। বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের কুশুন্ডা গ্রামের সামেলা বেগম বলেন, 'সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখি বাড়ির উঠানের অর্ধেক নদীতে বিলীন। দুটি ঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছি। আমাদের গ্রামের আরও কয়েক বাড়িতে ভাঙন লেগেছে।' উপজেলার পয়লা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও শ্রীধরনগর গ্রামের মন্টু মিয়া বলেন, এবার এমপি এসে সরেজমিন দেখে কথা দিয়েছিলেন কাজ শুরু হবে। যথাসময়েই ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলে এলাকাবাসীর উপকার করেছেন। আরও কিছু অংশে জিও ব্যাগ ফেললে একটি গ্রাম নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে।' এর আগের সপ্তাহে উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের নিন্দাপাড়া এলাকায় ভাঙনকবলিতদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ভাঙন রোধে এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করবেন বলে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের এমপি সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ। নদীপাড়ের ৬টি স্থানে ভাঙন রোধে কাজ শুরু হয়েছে। দ্রম্নত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় খুশি সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ। পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন ঘিওর উপজেলা চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান জনি, ইউএনও আমিনুল ইসলাম, শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম খান, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সালামত ফকির প্রমুখ।