ছাত্র আন্দোলন ও পরবর্তী কারফিউসহ অস্থিতিশিল পরিবেশের প্রভাব পড়েছে গাংনীর গরু ব্যবসায়ীদের ওপর। নিরাপত্তাসহ যোগাযোগব্যবস্থা অপ্রতুলতার কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে বড় বড় ব্যবসাীয়রা না আসায় বেচাকেনা একেবারই কমে গেছে। অন্যদিকে গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরুপ্রতি খরচ বেড়ে গেছে বেশ। সংকট কেটে গেলে আবারও বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ী ও হাটমালিকরা।
গাংনীর ভিটাপাড়ার গরুর খামারি রকিবুল ইসলাম জানান, তার খামারে ১৪টি বড় ও মাঝারি সাইজের গরু রয়েছে। সেগুলো বিক্রির উপযোগী হলেও ক্রেতার অভাবে বিক্রি করা যাচ্ছে না। রাজধানী ঢাকাসহ বেশ কয়েক স্থানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও পরিবহণ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তার কথা ভেবে কেউ আসতে চাইছেন না। আবার কারফিউ দিনে শিথিল হলেও রাতে সেটি চলমান। ব্যবসায়ীরা গরু কিনে সন্ধ্যার আগে ট্রাকভর্তি করে তা ঢাকাসহ অন্যত্র পাঠান। রাতে চলাচল সীমিত হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ট্রাক লোড দিতে পারছেন না।
ষোলটাকা ইউপির কুঞ্জনগরের গরু ব্যবসায়ী সফিউদ্দিন জানান, ছাত্র আন্দোলনের আগে ১১টি গরু কিনেছেন। এক দিন পরই হাটে তোলার কথা। অথচ আন্দোলন ও পরবর্তী কারফিউয়ের কারণে ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকার ব্যাপারী না আসায় সেগুলো বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। দিনে কারফিউ না থাকলেও রাতে কারফিউ চলমান। তাই ব্যাপারীরা আসতে চান না। গরু বিক্রি না হওয়ায় প্রতিদিন প্রতিটি গরুর খাবারের জন্য মোটা টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গাংনীর ঐতিহ্যবাহী পশুহাট বামন্দী, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ডুগডুগি, কুষ্টিয়ার মিরপুরসহ বেশ কয়েকটি হাটে ব্যাপারীরা গরু কিনে থাকেন। এ ছাড়া খামারি ও গেরস্তদের জন্য বাছুর গরু কেনেন রংপুর, দিনাজপুর ও রাজশাহী থেকে। চলমান পরিস্থিতির কারণে দূরদূরান্ত থেকে আর গরুর বাছুর আনা সম্ভব হচ্ছে না। এতে একরকম ব্যবসা বন্ধ বলা চলে। গত শুক্রবার ও সোমবার বামন্দী হাটে গিয়ে দেখা গেছে, আগের তুলনায় গরু আমদানি একেবারই কম। যা হাটে উঠেছে, তা দিন-দশেক আগের। বেচাকেনা নেই বলে জানিয়েছেন ব্যাপারী ও হাটমালিক। এতে ব্যাপারী ও হাটমালিকের রাখাল ও পাহারাদার খরচ উঠছে না বলে জানিয়েছেন তারা।
বামন্দী হাটমালিক সিরাজুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি বুঝে বাইরের ব্যাপারীরা বাজারে আসেন। তারা কোটি কোটি টাকার গরু কিনে নিয়ে যান। শাটডাউন আন্দোলন আর কারফিউর কারণে বাইরের ব্যাপারীদের আগমন নেই। গরু আমদানি-রপ্তানি না থাকলেও হাটের রাখালদের মজুরি দিতে হয়। এই হাটে অন্তত ৫০ জন কর্মী রয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি না হলে মোটা অংকের টাকা গচ্ছা দিতে হবে।