বন্ধ রেল, থমকে গেছে ভৈরব স্টেশনের হকারদের জীবিকা

প্রকাশ | ০১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
ঘুরছে না রেলের চাকা, থমকে গেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের হকারদের জীবিকা। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংতায় গত ১৯ জুলাই থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে ট্রেনের উপরে নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করা হকার এবং ফেরিওয়ালাদের জীবন। প্রতিদিন ভৈরব রেলওয়ে জংশন হয়ে চট্টগ্রাম-ঢাকা, চট্টগ্রাম-জামালপুর, ঢাকা- সিলেট ও ঢাকা-নোয়াখালী এই ৪টি রেলপথে আন্তঃনগর, কমিউটার, মেইল ও লোকালসহ ৩৩ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। এতে প্রায় তিন-চার হাজার যাত্রী প্রতিদিন বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করতেন। আজ বৃহস্পতিবার খুব সীমিত পরিসরে ট্রেন চলার সরকারি ঘোষণা দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে তা কেউ জানে না। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ শতাধিক হকার, দিন মজুর, শ্রমিক ও দোকানদার। ট্রেনের মতোই ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে খেলনা, বই, পেন, লজেন্স, ফল, মিষ্টি কিংবা রুমাল, বাদাম, চানাচুর, চা-বিস্কুট, পানি বিক্রি করা হকারদের জীবনের চাকাও এখন থেমে রয়েছে। তাদের পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার। তারা জানায়, স্টেশনে মানুষের মালামাল ট্রেনে তুলে দিয়ে যে টাকা পায় তা দিয়ে কোনোরকমে পরিবারের ভরণ-পোষণ করে থাকে। ট্রেন না চলায় এখন তাদের কোন কাজ নেই। বাড়িতে থাকলে বউ বাচ্চারা টাকার জন্য বিরক্ত করে। তাই তারা স্টেশনে বসে সময় কাটায়। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিন পার করছে। সরেজমিন দেখা যায়, ব্যস্ত ভৈর বাজার জংশনে সুনশান নীরবতা। এই স্টেশনে পস্ন্যাট ফরমে স্থায়ী ও অস্থায়ী ৩৫টি দোকান রয়েছে। দোকানগুলোর ব্যবসা স্টেশনকে ঘিরে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৯ জুলাই থেকে সারাদেশের মতো ট্রেন চলাচল বন্ধ বন্ধ থাকায় এ সব দোকান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। হকার বাচ্ছু মিয়া বলেন, 'আমি ট্রেনে ট্রেনে ঘুরে কলা বিক্রি করতাম। এই আয়েই চলত সংসার। এখন অপেক্ষায় আছি কবে ট্রেন চালু হবে। দ্রম্নত চালু না হলে আমাদের সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে।' হোটেল মালিক আলকাছ মিয়া বলেন, 'হোটেল আয়েই চলতো সংসার ও সন্তানের পড়াশোনার খরচ। কিন্তু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় টান পড়েছে আয়-রোজগারে। যেহেতু আমাদের ব্যবসা ট্রেনের যাত্রীকেন্দ্রিক। তাই ট্রেন না চললে যাত্রী আসবে না। এজন্য দ্রম্নত ট্রেন স্বাভাবিক না হলে আমাদের সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে।' ভৈরবের রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার বলেন ইউছুফ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত ১৯ জুলাই থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ট্রেন চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হতে পারে। এই স্টেশনে ৫ শতাধিক হকার পস্নাট ফরমে ও ট্রেনে বিভিন্ন পণ্য ফেরি করে বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবার ৯ হকার অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।