ভাঙনে বিলীন হচ্ছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন পারকি সমুদ্রসৈকত। সৈকতের আশপাশে প্রভাবশালীদের দখলদারি আর মৎস্য ঘেরের পানি চলাচলকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। সৈকতের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সাড়ে ১০ একর জায়গাও দখল করে প্রভাবশালীদের গড়ে তোলা মৎস্য ঘেরের পানি ছেড়ে দেওয়ায় সৈকতে খালের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে জোয়ারের পানিতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ছে পারকি সমুদ্রসৈকত। সৈকতের উন্নয়নে সরকার কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করলেও প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কারণে সৈকতের সৌন্দর্য বারবার বিলীন হচ্ছে। ফলে বেড়াতে আসা পর্যটকরা হতাশা হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। দ্রম্নত সৈকত রক্ষায় সরকার প্রদক্ষেপ না নিলে বিলীন হয়ে যাবে পারকি সৈকত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারকি সৈকতের বেড়িবাঁধ ঘেঁষে ফুলতলী মৌজার ৫২৯ দাগে প্রায় সাড়ে ১০ একর জায়গা পানি চলাচলের জন্য একটি জলাধার রয়েছে। এই জলাধারটি ফুলতলী থেকে পারকি খালে এসে মিলিত হয়েছে। এই জায়গার মালিকানা পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু ভূমি অফিসের খাতায় জলাধার থাকলেও সরেজমিন গিয়ে জলাধারের কোনো অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। জলাধারের জমি এখন প্রভাবশালীদের মৎস্য ঘের। সৈকতের বুকে সরকারি খাসজমি দখলে নিয়ে গড়ে উঠছে কয়েকটি মৎস্য ঘের, সৈকতের রিংবাঁধ কেটে এই মৎস্য ঘেরের পানি চলাচলে করে। এতে করে সৈকতের বালি ও ঝাউগাছের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। গত তিন দিনে সাগরে জোয়ারের পানি বাড়লে এই কাটা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে পারকি সৈকত।
বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, সৈকতের পাশে মৎস্য ঘেরের পানি চলাচলের কারণে রিং বাঁধটি ভেঙে পানি ওঠা-নামায় খালের সৃষ্টি হচ্ছে। অতিদ্রম্নত পাথর বা জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধটি মেরামত না করলে পারকি সৈকত রক্ষা করা যাবে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, 'পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাড়ে ১০ একর জমি আমরা সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জরিপ শেষে উদ্ধার করে সাইন বোর্ড বসিয়ে দেব। পারকি সৈকতের ভাঙন ঠেকাতে অর্থ প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে আমরা একটি প্রকল্পও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে দিয়েছি। অনুমোদন হয়ে আসলে আমরা কাজ শুরু করব।'
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশতিয়াক ইমন বলেন, পারকি সৈকতের ভাঙন ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, অবৈধ দখলকৃত জমি উদ্ধার করা হবে।