দেশব্যাপী চলমান পরিস্থিতি, কারফিউ, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ধীরগতির ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের অনলাইনভিত্তিক সেবায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সারাদেশের ন্যায় একই অবস্থা চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলাতেও।
উপজেলার ব্যবসায়ী তানজিমুল ইসলাম মার্কেটে ছোট্ট একটি দোকান করেন। তার সেই দোকানটিকে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের পাশাপাশি অনলাইনে চাকরির আবেদন, জন্ম-মৃতু্য নিবন্ধন ও সংশোধন, ই-পাসপোর্ট, ই-টিকেট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ও কলেজ ভর্তির আবেদনসহ বিভিন্ন অনলাইন ভিত্তিকসেবা প্রদানের আয়-রোজগার দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা অচল হয়ে পড়ায় এক প্রকার আয়-রোজগারবিহীন অলস সময় পার করেছেন তিনি। গত বুধবার থেকে সারাদেশের ন্যায় এই এলাকাতেও সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ায় পুরোদমে কাজ শুরু করেছেন। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ধীরগতির ফলে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
স্থানীয় রুবি আকতার জানান, তার ছোট ছেলে সৌদি আরবে থাকেন। প্রতিদিন একবার হলেও ছেলের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন তিনি। তবে বেশ কিছুদিন ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় ছেলেকে ভিডিও কলে দেখতে পারেননি। গত বুধবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সচল হওয়ার পর তার ছেলের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছেন। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে অতিসত্বর মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ চালুর দাবি জানান তিনি।
হলুদিয়া বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, বাজারে একটি মুদির দোকান রয়েছে তার। প্রিপেইড মিটার ব্যবহারের ফলে হঠাৎ করে গত শনিবার মিটারের ব্যালেন্স শেষ হয়ে যায়। নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় মিটারে ব্যালেন্স লোড করা সম্ভব হয়নি। পরে বিদু্যৎ অফিসে যোগাযোগ করে ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে বুঝতে না পেরে তার মতো বিপদে পড়েন অনেক ব্যবসায়ী।
উপজেলার অপর এক বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, 'কিছুদিন আগে আমার মেয়ের জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করেছিলাম। সংশোধনের প্রক্রিয়া শেষে সেটি গত সোমবার পাওয়ার কথা ছিল। তবে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় ঠিকমতো সেটি পাননি। ইন্টারনেট সংযোগ পুরোদমে সচল হলে এমন সমস্যায় পড়তে হতো না।
বাজালিয়া বাস স্টেশনের মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট রিপন বলেন, শুরুর দিকে ইন্টারনেট বন্ধ হলেও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট অ্যাকাউন্টগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা মজুদ থাকার ফলে সমস্যায় পড়তে হয়নি। সেসময় হঠাৎ করে গ্রাহকদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় সব টাকা দুই দিনের মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এরপর ব্যাংকের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং কর্তৃপক্ষ দোকানে তেমন আসেনি। ফলে এজেন্ট অ্যাকাউন্টগুলোতে টাকা লোড করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে কিছুদিন ব্যবসা তেমন একটা হয়নি। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সচল ও ব্যাংক চালু হওয়ায় এখন আর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না।