বরগুনার তালতলী উপজেলা শহরে যথাযত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নির্দিষ্ট স্থান নেই। জনবহুল এই শহরের বিভিন্ন রাস্তার পাশ এখন ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে স্কুল-কলেজসহ পথচারীরা।
জানা যায়, উপজেলার খাদ্যগুদামের দক্ষিণ পাশে, তালতলী মডেল প্রথমিক বিদ্যালয়ের গেটের পশ্চিম পাশে, মাছ বাজার ঘাট ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারসহ রাস্তার পাশে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলায় যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় যেখানে-সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খাবরের প্যাকেট-উচ্ছিষ্ট ও ল্যাবে ব্যবহারিত জিনিসপত্র, ময়লা-আর্বজনা ফেলা হচ্ছে। এর ফলে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ময়লা-আর্বজনা ফেলায় শিক্ষার্থীদের দুর্গন্ধ সহ্য করেই নিয়মিত যাতায়াত করতে হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও পথচারীরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তালতলী শহর বাজারের বিভিন্ন দোকানের বর্জ্য, বাসাবাড়ির বর্জ্যসহ বাজারের সব বর্জ্য রাস্তার পাশে ফেলা হয়। এতে এক দিকে বেড়েছে মশা-মাছির চরম উপদ্রব, অন্যদিকে ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যত্রতত্র খোলা স্থানে রাস্তাজুড়ে ময়লার স্তূপ হওয়ায় এবং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ায় যান চলাচলসহ লোকজনের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে, জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দিনের পর দিন ময়লা-আবর্জনা থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী। ময়লা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে চারপাশের পরিবেশ বিষিয়ে উঠেছে। ফলে জনভোগান্তি দেখা দিয়েছে পুরো শহরে। স্থায়ী সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষে কাছে দাবি জানিয়েছে সাধারণ ব্যবসায়ীরাসহ এলাকাবাসি।
তালতলী বাজারের আকলিমা ট্রের্ডাসের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, 'আমাদের বাজারের ময়লা ফেরার নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। এ জন্য রাস্তার আশপাশেই ময়লা ফেলা হচ্ছে। ময়লার দুর্গন্ধে চলাচল করতে খুব কষ্ট হচ্ছে।'
স্থানীয় নজরুল ইসলাম লিটু বলেন, বাজার এলাকায় কয়েকটি স্থানে আবর্জনার স্তূপ গড়ে উঠেছে। এতে ব্যবসায়ী, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ পথচারীরা এই দুর্গন্ধ নিয়েই চলছে। বাজার পরিস্কারের জন্য হাট-বাজার ইজারা থেকে ৫% টাকা ব্যয় করা কথা থাকলেও তা কোনোদিনই করা হয়নি।
তালতলী প্রেস ক্লাবের সভাপতি খাইরুল ইসলাম আকাশ বলেন, শহরের দোকান, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, কনফেকশনারি, কয়েকটি ক্লিনিক, হাটবাজারের ইজারা এবং ট্রেড লাইসেন্স থেকে বছরে অনেক টাকা রাজস্ব নিলেও তাদের থেকে সেবা পাচ্ছে না জনসাধারণ ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো। দ্রম্নত বর্জ্য অপসারণে স্থায়ীভাবে জায়গা নির্ধারণ করে ডাস্টবিন নির্মাণের দাবি তার।
বড়বগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলম মুন্সী বলেন, ডাস্টবিন নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। বাজারের পরিবেশ ভালো রাখার জন্য শিগগিরই স্থায়ীভাবে ডাস্টবিন নির্মাণ করা হবে।
তালতলী ইউএনও সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, পৌরসভা না থাকায় উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করে স্থায়ীভাবে সমস্যাটি সমাধানের জন্য চেষ্টা করব। শিগগিরই একটি স্থায়ী ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হবে।