মেহেরপুরের গাংনীর উপযুক্ত মাটি আর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মাচাপদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের চিচিঙ্গা চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি হিসেবে চাহিদা থাকায় স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর রপ্তানি করা হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। একদিকে ফলন অন্যদিকে দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা বেশ খুশি। কৃষি বিভাগ বলছে, আরও নতুন নতুন সবজি আবাদে চাষিদের উদ্বুব্ধকরণসহ নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে মাচাপদ্ধতি ব্যবহার করে চিচিঙ্গা আবাদ করা হচ্ছে। স্বল্প সময় ও অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় অনেক চাষি এই সবজি চাষে উদ্বুব্ধ হয়েছেন। স্থানীয় বাজারে প্রতিকেজি চিচিঙ্গা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা।
আর খুচরা বাজারে এর দাম ৩০ টাকা কেজি। জমি প্রস্তত, বীজ, সার, কীটনাশক ও মাচা তৈরিতে বিঘাপ্রতি খরচ মাত্র ১৫ হাজার টাকা।
সবজিগ্রাম খ্যাত সাহারবাটি গ্রামের আকমল হোসেন জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে মাচাপদ্ধতিতে চিচিঙ্গা চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে মাত্র ২২ হাজার টাকা। প্রতি সপ্তাহে ৪-৫ মণ চিচিঙ্গা ওঠান ক্ষেত থেকে। প্রতিমণ চিচিঙ্গা বিক্রি হয় ৫০০ টাকায়। ইতোমধ্যে তিনি ৫০ হাজার টাকার চিচিঙ্গা বিক্রি করেছেন আরও লক্ষাধিক টাকার চিচিঙ্গা বিক্রির আশা করছেন তিনি।
কাথুলী গ্রামের রানা জানান, এই অঞ্চলের উৎপাদিত চিচিঙ্গা খেতেও সুস্বাদু। প্রতিনিয়ত অন্যান্য সবজির সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। অনেক সময় ব্যবসায়ীরা সরাসরি ক্ষেত থেকে চিচিঙ্গা কিনে বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করেন। এতে চাষি ও ব্যবসায়ী উভয়ে লাভবান হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, যতদিন চাহিদা থাকে ততদিন সবজি হিসেবে চিচিঙ্গা বিক্রি করা হয়। শেষের দিকে চাহিদা কমে গেলে বীজের জন্য চিচিঙ্গা রেখে দেওয়া হয়। বীজ বিক্রি করেও ভালো টাকা লাভ হয়।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার এমরান হোসেন জানান, এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সব ধরনের ফসলের উপযোগী। কয়েক বছর ধরে চাষিরা মাচাপদ্ধতিতে চিচিঙ্গা আবাদ করেছেন। এই আবাদে আজও কেউ লোকসানে পড়েনি। সবাই লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নতুন নতুন আবাদে কৃষদদের উদ্বুব্ধ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে চিচিঙ্গাসহ বিভিন্ন সবজি আবাদে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হয়েছে।