মান্দায় গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা সমবায় সমিতির সভাপতি
প্রকাশ | ২৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর মান্দায় প্রায় দুই শতাধিক গ্রাহকের সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন আল-আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান প্রামাণিক। উপজেলার সতীহাট অফিসে গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা সমবায় অফিসের মাধ্যমে নিবন্ধন নিয়ে সঞ্চয় ও ঋণদান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। এ ঘটনায় গত শুক্রবার দুপুরে সমিতি কার্যালয়ে তালা দিয়েছে ভুক্তভোগী বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।
গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে ব্যাংকের আদলে আমানত গ্রহণ করে গ্রাহকদের প্রতি মাসে লভ্যাংশ দিতে থাকে। শুরুর দিকে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে আমানতের বিপরীতে গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা নিয়মিত দিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু তিন-চার মাস ধরে গ্রাহকদের আমানত ফেরত ও লভ্যাংশের টাকা প্রদানে টালবাহানা করতে থাকে। আমানতের টাকা ফেরতে গ্রাহকরা চাপ দিলে লাপাত্তা হন সংস্থার সভাপতি নুরুজ্জামান প্রামাণিক। এখন আমানতের টাকা ফেরতের জন্য প্রতিদিনই গ্রাহকরা সমিতির কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন।
শ্রীরামপুর গ্রামের ভুক্তভোগী কামরুন্নাহার সুইটি বলেন, 'আমার স্বামী অনেক কষ্টে অর্জিত ১২ লাখ টাকা আল-আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিতে আমানত রেখেছিলেন। গত ৩ মাস ধরে আমরা কোন লভ্যাংশ পাচ্ছি না। আমাদের আমানতের টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।'
নারায়ণপুর (পালপাড়া) গ্রামের বিশ্বনাথ দাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 'আমার মেয়ের বিয়ের জন্য এই সমিতিতে আমি ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা আমানত রেখেছিলাম। সমিতির সভাপতি আমানতের টাকা আজ দেবে কাল দেবে বলে গত পাঁচ মাস থেকে আমাকে ঘুরাচ্ছে। টাকা হাতে না পাওয়ার কারণে আমার মেয়ের বিয়ে ভেঙে গেছে।'
এ ছাড়াও নওগাঁ সদর উপজেলার পয়না গ্রামের কুলসুম বেগমের ৪ লাখ, মান্দা উপজেলার জহুরার ১ লাখ ৩০ হাজার, সফিকুল ইসলামের ৫ লাখ ৭০ হাজার, আ. সালাম ১১ লাখসহ প্রায় দুই শতাধিক গ্রাহকের আমানতের সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে আল-আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান প্রামাণিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ডিজিএম রুবেল হোসেন বলেন, 'আমি ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম। বিগত ৩-৪ মাস আগে আমাকে জোরপূর্বক চাকরিচু্যত করা হয়। পরবর্তীতে কর্মরত সবাইকেই চাকরি হতে অব্যাহতি প্রদান করেন সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান প্রামাণিক।'