সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৪১ নং যদুয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই যাতায়াতের পথ। সড়ক না থাকায় কাদা, পানি ভেঙে পাঠদানে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ে কোনো মাঠ না থাকায় খেলাধুলার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে তারা।
সারেজমিন ঘুরে জানা যায়, ১৯৫০ সালে উপজেলার কাদাকাটি ইউনিয়নে ৪১ নং যদুয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ছয়জন শিক্ষক, একজন নৈশপ্রহরী ও ১৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই খালের আইল পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত জমির আইল সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায়। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীরা।
কেউ কেউ আবার হাঁটু পানি ভেঙে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। কেউ বা কাপড় ভিজিয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ঐশী সরকার জানায়, বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় প্রায়ই বই, খাতা ও পরনের পোশাক ভিজে যায়। দ্রম্নত বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তাসহ মাঠ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে ওই শিক্ষার্থী।
তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র তুয়া রায় জানায়, 'বৃষ্টি হলে জমির আইল ডুবে যায়। আমরা কষ্ট করে যাতায়াত করতে পারলেও আমাদের খুব সমস্যা হয়। মাঝেমধ্যেই পড়ে গিয়ে বই-খাতাসহ পোশাক ভিজে যায়।'
ইউপি সদস্য ও বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি উত্তম কুমার সরকার বলেন, 'আমার মেয়ে ওই স্কুলে পড়ে, বৃষ্টি হলে জমির আইলে পানি ওঠে, যাতায়াতে সাপে কাটাসহ নানা ধরনের ঝুঁকি দেখা দেওয়ায় কাজ বাদ দিয়ে মেয়েদের স্কুলে রেখে আসতে হয়।'
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা তাপসী সরকার বলেন, বৃষ্টির মৌসুমে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে ছাত্রছাত্রীদের বই-খাতা ভিজে যাচ্ছে। এতে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ, তা ছাড়া বিদ্যালয়ে মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় করতে পারছে না।
কাদাকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দীপঙ্কর কুমার দীপ বলেন, 'বিদ্যালয়ের রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ এসেছিল, কিন্তু খাল খননের কারণে রাস্তা নির্মাণে আপত্তি জানানোর কারণে বরাদ্দ ফেরত গেছে। বিদ্যালয়ের রাস্তা ও মাঠ নির্মাণে পুনরায় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। খালের পাশেই এই সড়ক থাকায় বৃষ্টির পানি নামতে পারে না, তাই বৃষ্টি হলে দ্রম্নত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার হবে তাড়াতাড়ি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার বর্মন জানান, 'বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলব। দ্রম্নতই শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা হবে।'