বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১
ময়মনসিংহ আর্চ স্টিল সেতু

বাঁকানো সংযোগ সড়কে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

ময়মনসিংহ বু্যরো
  ২০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
আপডেট  : ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:২০
ময়মনসিংহ আর্চ স্টিল সেতুর প্রস্তাবিত ডিজাইন -যাযাদি

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টি নন্দন কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল সেতু। গত ১১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে পাইলিংয়ের কাজ। সেতুর উত্তর-পূর্ব অংশে সংযোগ সড়ক সোজা না নিয়ে বাঁকা করে নেওয়ায় সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি ব্যয় বাড়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছেন, দুর্ঘটনারোধে সংযোগ সড়ক বাঁকানো হয়েছে।

তিন হাজার ২৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ নগরীর কেওয়াটখালী রেলসেতু ঘেঁষে নির্মিত হচ্ছে আর্চ স্টিল সেতু। ঢাকা বাইপাস থেকে শম্ভূগঞ্জ পর্যন্ত ৬ দশমিক ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুর উত্তর-পূর্ব অংশের নকশা পরিবর্তনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, সংযোগ সড়কটি প্রথমে শম্ভূগঞ্জ তিন রাস্তার মোড় গিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন নকশায় টোল পস্নাজা সংলগ্ন থেকে চায়না মোড় হয়ে বাঁকা করে নেওয়া হচ্ছে মুটকিভাঙ্গা ব্রিজ পর্যন্ত। এতে ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি সেতুর সৌন্দর্য নষ্ট হবে। একটি মহলকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার জন্য এমনটি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।

স্থানীয় ট্রাক চালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, উত্তর-পূর্ব অংশে সেতুর ভিডিওতে দেখেছি সংযোগ সড়কটি বাঁকা হচ্ছে; এতে দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়বে। কারণ বাঁকা রোডে গাড়ি টার্ন নেওয়ার সময় দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। সড়কটি সোজা হলে দেখতেও ভালো লাগত, দূর্ঘটনার সম্ভাবনাও কম থাকত।

টোলপস্নাজা সংলগ্ন অধিগ্রহণকৃত জমির টাকা উত্তোলনেও দেখা দিয়েছে জটিলতা। হয়রানির শিকার হচ্ছেন মানুষ।

ভুক্তভোগি দেলোয়ার হোসেন সৌরভ বলেন, 'অধিগ্রহণে আমাদের ৫১ শতাংশ জায়গা পড়ছে, টাকা তুলতে গিয়ে পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছি। কাগজপত্রের নানা সমস্যার কথা বলে ১০ পার্সেন্ট টাকা চাচ্ছে এলএ অফিসের লোকজন। ৬ পার্সেন্ট টাকা সরকার আগেই কেটে নিয়েছে; কিন্তু আমরা তো ক্ষতিগ্রস্ত তাহলে ক্ষতি পোষাব কিভাবে?

কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল সেতু প্রকল্পের ব্যবস্থাপক দিদারুল আলম বলেন, 'আর্চ স্টিল সেতুটি ময়মনসিংহবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর একটি উপহার। সেতুটির সম্ভাবতা যাচাইয়ের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ একটি আন্তর্জাতিক কোম্পনি নিয়োগ করলে তারা চারটি অ্যালাইনমেন্ট প্রস্তুত করে। চারটি অ্যালাইনমেন্টের মধ্যে সবচেয়ে যেটি কম ব্যয় সেটি তারা আমাদের সুপারিশ করে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে ব্রিজ ডিজাইন করা হয়। সেতুটি রেললাইনের ৮ পয়েন্ট ৫ মিটার ওপর দিয়ে যেতে হবে, এতে ঝুঁকিমুক্ত যানচলাচলে যতটুকু দূরত্ব রাখা দরকার সেটি শম্ভুগঞ্জ পর্যন্ত নাই। সরাসরি শম্ভুগঞ্জে সেতুর সংযোগ দিলে স্স্নোপ বেড়ে যেত এবং দুর্ঘটনা ঘটত। তাই যানচলাচল নির্বিঘ্ন করতে বাঁকা করে চয়না মোড়, সেখান থেকে মুটকিভাঙ্গা ব্রিজের অগ্রভাগ ঝাওগড়া স্কুলের সামনে মিলিত করা হয়েছে। এতে অন্য কোন কারণ নেই। সবার সহযোগিতায় আমরা স্বচ্ছতার সহিত কাজ করছি। ২০২৫ সালের জুনে সেতুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।'

বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, 'অধিগ্রহণের টাকা তুলতে গিয়ে এলএ অফিসের লোকজনকে সেটা আমিও অবগত রয়েছি। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে কঠিন পদক্ষেপ নেয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে