রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

চৌগাছায় মুখিকচুর দামে কৃষকের হাসি

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
চৌগাছায় মুখিকচুর দামে কৃষকের হাসি

যশোরের চৌগাছায় মুখিকচুর দামে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার সবচেয়ে বড় ও পাইকারি মুখিকচুর হাট চৌগাছা বাজার। শুক্রবার সাপ্তাহিক হাটের দিন। এই হাটে কাকডাকা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার মুখিকচু বিক্রি করেন কৃষকরা।

কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য তারা সরাসরি এ হাটে তোলেন। পাইকারি দামে বিক্রি করেন কচু। রাজধানীর ঢাকা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ীরা ট্রাক বোঝাই করে কিনে নিয়ে যায় কচু। এখানকার টাটকা কচু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়।

জানা যায়, উপজেলার নারায়ণপুর, স্বরূপদাহ, সুখপুকুরিয়া, হাকিমপুর, জগদিশপুর ও পাতিবিলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা শত শত ভ্যান, আলম সাধু, ইজিবাইকযোগে বস্তায় ভরে চৌগাছা পাইকারি বাজারে আনা হয় মুখিকচু। কৃষকরা তাদের চাষের কচু নিয়ে আড়তে বসে থাকেন। বড় বড় পাইকারি ক্রেতা সেই কচু দেখে পছন্দ ও দামে পটে গেলে তা কিনে নেন। পরে নিজেদের বস্তায় ভরে ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে চলে যান রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে। শুক্রবার চৌগাছা পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায় পুরো বাজারটি কচুতে জমজমাট বা পরিপূর্ণ।

কচু বিক্রি করতে আসা উপজেলার পেটভরা গ্রামের শামছুল আলম জানান, 'উপজেলার সেরা কচু বিক্রির হাট এটি। এখানে ভালো দামে কচু বিক্রি করতে পারেন। কৃষকরা সরাসরি পাইকারি দামে কচু বিক্রি করে ভালো লাভবান হন। তাছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। এ বছর এক বিঘা জমিতে মুখিকচুর আবাদ করেছি খরচ বাদে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা লাভ হবে।'

পৌর এলাকার আরেক চাষি বেলেমাঠ গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, 'পাশের উপজেলা ঝিকরগাছা, কোটচাঁদপুর, কালিগঞ্জ ও মহেশপুর থেকে কচু বিক্রি করতে কৃষকরা আসেন এ হাটে। হাটে বাইরের বড় বড় পাইকারি ব্যবসায়ীরা থাকেন এবং প্রচুর চাহিদা থাকে। যার ফলে কচু বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের টাকাও পেয়ে যাই।' স্থানীয় আড়তদার আজিজুর রহমান জানান, 'কৃষকরা সরাসরি জমির কচু তোলার পরই হাটে নিয়ে আসেন। একদিকে যেমন বিক্রি করতে নির্দিষ্ট জায়গা পেয়েছেন, তেমনই ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন গ্রেডের কচু বাছাই করে সংগ্রহ করতে পারছেন। এতে উভয়ই লাভবান হচ্ছেন।'

উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল কদর বলেন, 'কৃষকের ভাগ্য বদলে কাজ করছে উপজেলার পাইকারি কাঁচামাল ও মুখিকচুর হাটটি। এ উপজেলায় এটিই বড় পাইকারি কাঁচামালের হাট ফলে কৃষকরা সরাসরি পাইকারি বাজারে বা হাটে কচু বিক্রি করতে পারছেন। মুখিকচুর দামে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। বাজারজাতের সুবিধা থাকায় আগামীতে ব্যাপকহারে কচু চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।'

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হুসাইন বলেন, 'মুখিকচু একটি লাভজনক চাষ। উপজেলাজুড়ে মোট ৩২৫ হেক্টর জমিতে মুখিকচুর চাষ হচ্ছে। আগামীতে এ উপজেলায় ব্যাপকভাবে মুখিকচুর চাষ বৃদ্ধি পাবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে