রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

বাগেরহাট শহরের ৭০ ভাগ সড়কই খানাখন্দে ভরা, ভোগান্তি চরমে

বাগেরহাট সদর প্রতিনিধি
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
বাগেরহাটে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় খানাখন্দে ভরা ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক -যাযাদি

দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা বাগেরহাট জেলা শহরের অধিকাংশ সড়কই খানাখন্দে ভরা। বছরের পর বছর ধরে যান চলাচলের অনুপযোগী পৌরসভার ৭৮ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সড়কের ৭০ ভাগই এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অধিকাংশ সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এমন অবস্থায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে চলাচল করতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পেঁৗঁছেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

বাগেরহাট শহর ১৯৫৮ সালে পৌরসভা হওয়ার পর ১৫ দশমিক ৮৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভাটি ১৯৯১ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৭টি মহলস্নায় বর্তমানে বসবাস করেন প্রায় দেড় লাখ মানুষ। জেলা সদর হওয়ায় ৯ উপজেলার মানুষকে প্রতিনিয়ত বাগেরহাট শহরে আসতে হয়। এক দশকেরও অধিক সময় ধরে বাগেরহাট পৌরসভার ৭৮ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশই সংস্কার করা হয়নি। ফলে অধিকাংশ সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী ভাঙাচোরা এসব সড়ক দিয়ে চলাচল করতে মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহরের নূর মসজিদ থেকে এলজিইডি মোড়, রাহাতের মোড় থেকে চানমারী ব্রিজ পর্যন্ত, পুরনো বাজার থেকে সম্মিলনী স্কুল, নূর মসজিদ থেকে সরকারি মহিলা কলেজ রোড, মুন্সীগঞ্জ থেকে হাঁড়িখালী রোড, সরকারি বালিকা বিদ্যালয় রোডসহ প্রধান প্রধান অধিকাংশ সড়ক যান চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা, খারদ্বার, বাসাবাটী, সাহাপাড়া, দশানী, গোবরদিয়া, সোনাতলা, সরুই এলাকার অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট নাজুক অবস্থায় রয়েছে।

শহরের ইজিবাইক চালক ফরিদ হোসেন বলেন, 'এই নূর মসজিদরে মোড় থেকে এলজিইডি মোড় পর্যন্ত আমাদের ইজিবাইক নিয়ে ঢেউ খেতে খেতে যাত্রী বহন করতে হয়। এতে যাত্রী ও আমাদের কষ্ট হয়, গাড়িরও ক্ষতি হয়। গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। শহরের অধিকাংশ সড়ক এখন অটোরিকশা চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। আগের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা অনেক কমে গেছে। সড়কে বের হলেই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অটোরিকশা প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে। তারপরও পেটের টানে বাধ্য হয়ে অটো চালাচ্ছি। আমরা চাই দ্রম্নত যাতে এই সড়কগুলো মেরারত করা হয়।'

মৎস্যঘের ব্যবসায়ী সুমন শেখ বলেন, 'আমি সদর উপজেলার কাড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। জরুরি প্রয়োজনে প্রতিদিনই শহরে আসতে হয়। কিন্তু রাস্তাঘাটের যে অবস্থা তাতে হাঁটাচলা করাও কষ্ট।

শিক্ষক আবু সাঈদ শুনু বলেন, 'বাগেরহাট পৌরসভার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ, বিষয়টি বলারও কেউ নেই, দেখারও কেউ নেই। এমপি শেখ তন্ময় বিষয়টি দেখবেন এই প্রত্যাশায় দিন পার করছি।'

বাগেরহাট বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর তালুকদার আব্দুল বাকী বলেন, বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পৌরসভার আওতাধীন। কিন্তু দুঃখের বিষয় দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না করায় টার্মিনালের অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলোয় বড় বড় গর্ত হয়েছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত গাড়ির বিভিন্ন যত্রাংশের ক্ষতি হচ্ছে। আমরা মালিক সমিতি সমস্যা সমাধানে একাধিকবার ইট, বালি দিয়ে ভাঙা স্থান মেরামত করেছি। কিন্তু কিছুদিন যেতে-না যেতেই আবার ভেঙে যায়।

পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান বলেন, দ্রম্নতই পৌরসভার প্রধান ১১টি সড়কসহ ভাঙাচোরা সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে