রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

শিবচরের পথে-প্রান্তরে কদম ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য

এস এম দেলোয়ার হোসাইন, শিবচর (মাদারীপুর)
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
শিবচরের পথে-প্রান্তরে কদম ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য

বাংলা প্রকৃতির ছয়টি ঋতুঘুরে ঘুরে আসে বিচিত্র সৌন্দর্য নিয়ে। ষড়ঋতুর বাংলাদেশে বর্ষা এক অনন্য ঋতু। প্রকৃতিতে এখন বর্ষাকাল। শিবচরের পথে-প্রান্তরে কদম গাছগুলো ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে। এ যেন আবহমান বাংলার বর্ষা বরণের প্রাকৃতিক আয়োজন। গোলাকার সাদা হলুদ রঙে মিশ্রিত ফুলটি দেখতে যেন ভোরের ঊষা। রুপসী তরুর অন্যতম হলো কদম ফুল।

আজ প্রকৃতি যেন কানের দুলে সেজেছে কদম ফুল দিয়ে। কবিতায় গানে বর্ষাকে বর্ণনা করতে বারবার এসেছে কদম ফুল প্রসঙ্গ। এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে অথবা বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল' গানগুলো যেন প্রকৃতিতে বর্ষার রূপকে ছবির মতো তুলে ধরে। গ্রাম-বাংলার প্রকৃতি আর বৃষ্টির প্রতিটি রিমঝিম ফোঁটা যেন সবাইকে সম্মোহিত করছে।

মাদারীপুর শিবচর উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে এখন হলুদে সেজেঁছে সর্বত্র। বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলছে কদম ফুলের। এই বিরামহীন বর্ষণে গাছের শাখে শাখে সবুজ পাতার আড়ালে ফুটে উঠেছে অসংখ্য কদম ফুল। উপজেলার শিবচর-পাঁচ্চর সড়কের দুই পাশে অসংখ্য কদম ফুল গাছ দেখা গেছে। যেখানে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে হলুদ বর্নের অসংখ্য কদম ফুল।

জানা যায়, আষাঢ়-শ্রাবণে কদম গাছ ফুলে ফুলে ভরে থাকত। কদম ফুল সৌন্দর্যে পিপাসুদের তৃপ্তি দিত। তরুণ-তরুণীরা কদম ফুল তাদের প্রিয়জনকে উপহার দিত। মেয়েরা পরত খোঁপায়। খেলায় মেতে উঠত শিশুরাও। ফলে কদম ফুলের গাছ ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্রে কাজে ব্যবহার হতো। কদম গাছ কমে যাওয়ায় এখন মানুষ ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে। সবাই এখন বাড়ির আঙ্গিনায় ফলমূল ও ফুলের গাছ লাগাচ্ছে। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে কদম ফুলের গাছ।

মো. জলিল ঢালী নামের মানবাধিকার কর্মী জানান, ব্যক্তি পর্যায়ে ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার ও সরকারি-বেসরকারি জায়গায় কদম গাছ লাগানো প্রয়োজন। তাহলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও প্রকৃতির সৌন্দর্য রক্ষায় কদমগাছ রোপণ ও এর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি।

শিবচর উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আষাঢ়-শ্রাবণে কদম গাছ ফুলে ফুলে ভরে থাকে। সৌন্দর্যে মন ভালো রাখতে হলে কদম ফুলের বিকল্প নেই। এ বর্ষায় আমাদের সবাইকে অন্ততপক্ষে ১টি করে কদম ফুলের গাছ লাগানো প্রয়োজন।

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম যায়যায়দিনকে জানান, বর্ষা এলেই বাংলার খাল-বিল, নদী-নালা পানিতে ভরে ওঠে। সেইসঙ্গে পথে-প্রান্তে কদম গাছে ফুটে থাকে ফুল। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতি ঐতিহ্য রক্ষায় কদম ফুলের অবদান রয়েছে। গন্ধে, বর্ণে, সৌন্দর্যে ও ওষুধি গুণে কদমগাছ পরিপূর্ণ হলেও কালের বিবর্তণে হ্রাস পাচ্ছে কদম গাছের সংখ্যা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সব ধরনের গাছ রোপণ করার আহ্বান জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে