কোটাবিরোধী আন্দোলনে সহিংসতায় টোল পস্নাজায় ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়ায় আপাতত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই উড়ালপথের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড।
দু'টি টোল পস্নাজা পুড়িয়ে দেওয়া এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসিব হাসান খান।
তিনি বলেন, 'আমাদের দু'টি টোল পস্নাজা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে গেছেন। এ অবস্থায় সিদ্ধান্ত হয়েছে কারফিউ না উঠলে, দেশের পরিস্থিতি একদম স্বাভাবিক না হলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ থাকবে। কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানীর টোল পস্নাজা ভাঙুচর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার মহাখালীর টোলপস্নাজায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
আগুনে টোল পস্নাজার ছাউনি, টোলের বুথ এবং অপারেটিং সিস্টেম পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, কম্পিউটারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি।
হাসিব হাসান খান বলেন, 'বনানী টোল পস্নাজা সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আমাদের টোল বুথ, সিস্টেম পুড়ে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে একটা আধুনিক ইউনিট। নতুন করে আবার ক্যামেরা আনা, অন্যান্য যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি স্থাপন করা একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এগুলো দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে আনতে হবে। ফলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হতে ঠিক কত দিন সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না।'
ক্ষতিগ্রস্ত দু'টি টোল পস্নাজায় 'ম্যানুয়ালি' টোল আদায় করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
হাসিব হাসান খান বলেন, 'এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষ আলোচনা করেছে। যদি যানবাহন চলাচল শুরু হয় তাহলে ওই দু'টি টোল পস্নাজা ম্যানুয়ালি চালানো সম্ভব। তবে এ বিষয়ে এখনো আমরা সিদ্ধান্ত নিইনি।'
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার বলেন, 'আমরা নির্মাতা ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এখনো দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। অবস্থা মোটামুটি ভালো হলে আমরা এটি চালু করে দেব।'
দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের আওতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে। সংযোগ সড়কসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে যান চলাচল উদ্বোধন করেন। এতে যান চলাচল শুরু হয় পর দিন ৩ সেপ্টেম্বর। এরপর চলতি বছরের ২০ মার্চ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ানবাজারর্ যাম্প খুলে দেওয়া হয়।