রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
ভেড়ামারা থেকেও দৃশ্যমান বিদু্যৎ প্রকল্প

পদ্মার পশ্চিমতীরে পরমাণু বিদু্যৎ প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞ

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
  ২৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
পদ্মার পশ্চিমতীরে পরমাণু বিদু্যৎ প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞ

পরমাণু বিদু্যৎ প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞ পদ্মার পশ্চিম তীর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকেও দৃশ্যমান। ভেড়ামারার আকাশে উঁকি দিচ্ছে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ-লালনশাহ সেতু ও পরমাণু বিদু্যৎ প্রকল্প। পরমাণু বিদু্যৎ প্রকল্পের কুলিং টাওয়ারগুলো কয়েক কিলোমিটার দূরে থেকেও স্পষ্ট। প্রত্যেকটি টাওয়ারের উচ্চতা ১৭৫ মিটার। পুরো এলাকাজুড়ে চলছে রাজ্যের ব্যস্ততা, কারও যেন দম ফেলাবার ফুসরত নেই। রাতদিন বিরামহীনভাবে চলছে ভিশনারি প্রকল্পটির নির্মাণযজ্ঞ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র করার অঙ্গীকার করা হয়েছিল। দলটি ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদু্যৎ প্রকল্প বাস্তবে রূপ দিয়েছে। বিদু্যৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের জন্য রাশিয়া থেকে এসেছে 'ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল' বা ইউরেনিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন। নতুন ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৩৩তম পারমাণবিক দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের 'ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল' বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান ২৯ সেপ্টেম্বর'২৩ দুপুরে এসে পৌঁছায়। সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে সড়কপথে ঢাকা থেকে রূপপুরে আনা হয় চালানটি। ইউরেনিয়াম পরিবহণে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ৬ অক্টোবর' ২৩ কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থায় দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের 'ফ্রেশ নিউকিয়ার ফুয়েল' বা ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান রাজধানী ঢাকা থেকে সফলভাবে রূপপুরে পৌঁছেছে।

উলস্নখ্য, ১৯৬১ সালে রূপপুরে পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও গতি পায় ২০০৮ সালের পরে। ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ এগিয়ে নেয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বও এক হাজার ৬২ একর জমির ওপর প্রকল্পের পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু হয়। দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদু্যৎকেন্দ্রটিতে দুটি ইউনিট রয়েছে। প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা করছে রাশিয়া। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, নির্ধারিত সময় চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। আর দ্বিতীয় ইউনিটেও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সমপরিমাণ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদন শুরু আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পটির উৎপাদিত বিদু্যৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে। এর ফলে দেশের বিদু্যৎ ঘাটতি পূরণে উলেস্নখযোগ্য রাখবে বলে আশা করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে