রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

খুলেছে অফিস-আদালত জনমনে ফিরছে স্বস্তি

স্বদেশ ডেস্ক
  ২৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
কারফিউ শিথিলের পর ফরিদপুরের সালথায় স্বাভাবিক হয় যান চলাচল -যাযানি

দেশের চলমান সহিংসতার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ শিথিলের ৫ দিন পর খুলেছে অফিস-আদালতসহ দোকানপাট, ব্যাংকসহ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে আতঙ্ক ছেড়ে জনমনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্বাভাবিক হচ্ছে যান চলাচল। কর্মে ফিরেছেন মানুষ। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-

আমাদের নাটোর প্রতিনিধি জানান, সারাদেশের ন্যায় নাটোরেও কারফিউ শিথিলের ৫ দিন অফিস-আদালত খোলায় জনমনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক হচ্ছে যান চলাচল। এদিকে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। নাটোরে এর মধ্যেই ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, নাটোর শহরের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে ব্যস্ত মালিক-কর্মচারী। অন্যদিকে কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর ব্যাংকগুলোয় গ্রাহকের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এতে গ্রাহকদের চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেবাদাতাদের। অন্যদিকে শহরের ব্যস্ত সড়কগুলোয় আগের মতো যান চলাচল স্বাভাবিক হতে দেখা গেছে। তবে নাটোর থেকে বিভিন্ন রুটের যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা তুলনামূলক কম।

আব্দুস সালাম নামে এক রিকশাচালক বলেন, 'কয়েক দিন রিকশা নিয়ে বের হতে পারিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন কেটেছে। ঘরে কিছু চাল কেনা ছিল, তা দিয়ে কোনোমতে দিন পার করেছি। ৬ দিন পর আজ রিকশা নিয়ে বের হয়েছি।'

ভ্যানচালক শাহজাহান আলী বলেন, 'দোকানপাট, অফিস বন্ধ থাকলে আমাদের রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। মানুষের মালামাল বহন করেই আমাদের পেট চলে। কয়েকদিন কারফিউর মধ্য বের হতে পারিনি। বাড়িতে শুয়ে-বসে দিন পার করেছি। সব বন্ধ থাকলে কষ্ট হয় আমাদের মতো দিনমজুর মানুষের।'

যাত্রীবাহী বাসচালক রবিন হোসেন বলেন, ৬ দিন পর আজ থেকে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে ভয়ে-আতঙ্কে যাত্রী নেই বললেই চালে। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ যাচ্ছে না। অনেক সময় বাস দাঁড় করিয়েও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।

নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, নাশকতা, সহিংসতাসহ কয়েকটি মামলায় নাটোরে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে নাটোর। আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছে।

এদিকে, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জানান, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করে জেলা প্রশাসন। এরপর থেকে দু'দিন ধরে ফরিদপুর জেলা ও উপজেলা সদরে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচল শুরু হয়। খোলা হয় দোকানপাট। সাধারণ মানুষের মধ্যে ফিরে আসে স্বস্তি। মঙ্গলবার ও বুধবার জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

দেখা গেছে, শহরে নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের নিজ নিজ কর্মে ফিরে যায়। রিকশা, ভ্যান, টেম্পো, মাহিন্দ্র ও বাস চলাচল করে যাত্রী নিয়ে। কারফিউ শিথিল করার জন্য সব ধরনের দোকানপাট ছিল খোলা, সারাদিন কাজ করে চাল-ডাল, তরকারি কিনে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘরে ফিরে নিম্ন আয়ের মানুষ। পাশাপাশি সব স্থানে ছিল জাঁকজমকপূর্ণ চলাচল।

আবেদ আলি নামে এক ভ্যানচালক বলেন, '৬ দিন পর কাজে বের হয়ে কিছু ইনকাম করে সংসারের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কিনে ঘরে ফিরছি। আমরা যারা খেটে খাওয়া মানুষ, আমাদের দৈনিক কাজ না করলে সংসার চলে না। আমরা চাই শান্তি।'

মুন্নু শেখ নামে এক কৃষক বলেন, 'গত এক সপ্তাহ হাট-বাজার বন্ধ থাকায় বাজারে পণ্য বিক্রি করতে পারিনি। এক সপ্তাহ পর বাজারে পাট বিক্রি করে তরকারিসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে আনলাম। আমরা কৃষকরা খুব চিন্তায় ছিলাম।'

সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে