যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে ভৈরব নদের ত্রিমোহনীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত মজুদখালী নদীতে কয়েকটি কুমিরের দেখা মিলেছে। নদীতে কুমির দেখার পর জেলেরা প্রাণের ভয়ে মাছ ধরতে নদীতে নামছে না। কুমির আতঙ্কে ভুগছেন গ্রামবাসী। বনবিভাগের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
নওয়াপাড়া নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে ভৈরব নদের ত্রিমোহনী থেকে মজুদখালী নদী সুন্দরবন হয়ে খুলনার রূপসা ও শিপসা নদীতে গিয়ে মিলেছে। খাবারের সন্ধানে সুন্দরবন থেকে এসব কুমির লোকালয়ে চলে আসতে পারে। সতর্কতার সঙ্গে নদীতে নামার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সরেজমিন সোমবার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, জয়রাবাদ গ্রামে শ্মশানের পাশে নদীর মধ্যে একটি কুমির ভেসে রয়েছে। কুমিরটি ধীরগতিতে নলামারা গ্রামের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর সেই কুমির দেখতে গ্রামবাসী ভিড় করেছে।
এসময় জয়রাবাদ গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, শনিবার দুপুরে গোসল করতে নদীতে নামেন তিনি। ডুব দেওয়ার পর কাটাযুক্ত লেজ জাতীয় কিছু তার কোমর ও হাতে আঘাত করে। এ সময় পাশে কুমির দেখে কোনোমতে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হন।
নলামারা গ্রামের নৌকার মাঝি বিমল কান্তি বলেন, মজুদখালী নদীতে ৫-৬টি ছোট-বড় কুমির ঘুরতে দেখেছেন তিনি। রোববার বিকালে খেয়া পারাপারের সময় একটি কুমির তার নৌকায় আঘাতও করেছে। ক্ষয়ক্ষতি না হলেও চরম আতঙ্কের মধ্যে যাত্রী নিয়ে পারাপারের কাজ করছেন তিনি।
দুই গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় জেলেরা বলেন, কুমিরের কারণে নদীতে নামতে পারছেন না তারা। ইতোমধ্যে কুমিরের আক্রমণে বেশ কয়েকটি হাঁস হারিয়ে গেছে। দ্রম্নত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
সিদ্ধিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম বলেন, এলাকাবাসী, মাঝি ও জেলেদের সতর্কতার সঙ্গে নদীতে নামার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা মৎস্য ও নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, জয়রাবাদ ও নলামারা গ্রামবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আবু নওশাদ বলেন, কুমির তো আর সীমানা চেনে না। খাবারের সন্ধানে বিভিন্ন নদনদীতে চলে আসতে পারে। তবে বনবিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রম্নত সময়ের মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।