মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১

কুশিয়ারায় ধীরগতিতে কমছে পানি ৩ লাখ মানুষের উৎকণ্ঠা

আব্দুল ওয়াদুদ, স্টাফ রিপোর্টার (মৌলভীবাজার)
  ১৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
মৌলভীবাজারের রাজনগরে বন্যার পানিতে ডুবে আছে একটি বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস -যাযাদি

দ্বিতীয় দফার টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদে পানি কমলেও হাকালুকি হাওড়বেষ্টিত জুড়ী নদে এখনো বিপদসীমার ১৫৯ সে.মি ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার সদর ও রাজনগর উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া একমাত্র নদী কুশিয়ারায় এখনো ধীর গতিতে পানি কমছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া নিয়মিত বুলেটিন থেকে আরও জানা যায়, কুশিয়ারায় বিপদসীমার ২৫ সে.মি নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও ঘর-বাড়ি এখনো তলিয়ে রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার কুশিয়ারা নদী পাড়ের রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেপুর ইউনিয়নে গেলে দেখা যায়, নদী পাড়ের বকশিপুর, ছিক্কাগাঁও, কামালপুর, আমনপুর, সুরিখাল, যুগিকোনা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাঁও, জোড়াপুর, রামপুর ও ফতেপুর ইউনিয়নের সাদাপুর, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, শাহাপুর, জাহিদপুর, আব্দুলস্নাহপুর, ইসলামপুর ও সদর উপজেলার মনুমুখ এবং খলিলপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম, হামরাকনো, নতুন বস্তি ও দাউদপুর এলাকাসহ নদী পাড়ের চার ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রাম এখনো পস্নাবিত রয়েছে।

নদী পাড়ের জলমগ্ন এলাকার বন্যার্তদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, কুশিয়ারা নদী থেকে পানি কমতেই চাচ্ছে না। প্রতিদিন এক থেকে দুই সে.মি পানি কমছে। এখনো নদী পাড়ের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের ঘর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্তা-ঘাট ও উঠানের ৯৫ শতাংশ জায়গা তলিয়ে রয়েছে।

কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে তারা বলেন, মুষ্টিমেয় ত্রাণ পেয়ে তাদের আহার মিটবে না। তারা চান বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান।

এদিকে মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মঙ্গলবার জানায়, জেলায় ৫ হাজার ১৬২ হেক্টর রূপা আউস জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ৩০ হেক্টর বীজতলা তলিয়ে গেছে। সবজির আরও ১ হাজার ৫৪ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। রোপা আউস ক্ষেতের ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, রোপা আউস ছাড়াও আগামীতে ১ লাখ ১ হাজার হেক্টর রোপা আমন আবাদ হবে। বন্যার এই পরিস্থিতি থাকলে রোপা আমনও চাষাবাদ ব্যাহত হবে।

এদিকে, মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম বলেন, জেলা জুড়ে ১ হাজার ৫০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৮টি বন্যাক্রান্ত হওয়াতে এখনো বন্ধ রয়েছে। ৬৯টি প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় কেন্দ্র চালু রয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, জেলায় ২১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কুল-কলেজ মিলে ৩৪টি ও মাদ্রাসা মিলে আরও ১৩টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে