নির্মাণাধীন রাণীনগর-সান্তাহার মহাসড়ক

বদলে দেবে আঞ্চলিক অর্থনীতির চিত্র

কমবে ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

রুহুল আমিন, নওগাঁ
নওগাঁর রাণীনগর-সান্তাহার আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণকাজ চলছে -যাযাদি
নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দ্রম্নতগতিতে এগিয়ে চলেছে নওগাঁর রাণীনগর-সান্তাহার আঞ্চলিক মহাসড়কের আট কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ। দুর্ভোগ কমাতে কাজের গুণগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে শতকরা ৪০ ভাগ কাজ। পুরো কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হবে উত্তরবঙ্গের ৫টি জেলা। নওগাঁ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ অন্যান্য জেলার চলাচলে দূরত্বের পাশাপাশি এক ঘণ্টা সময় কমিয়ে এনেছে নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক। মোট ৩১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে নওগাঁ সড়ক বিভাগের আওতায় থাকা ২৯.১৯ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শেষে চলাচলের জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়েছে কয়েক বছর আগেই। কিন্তু মহাসড়কের সান্তাহার মোড় থেকে রাণীনগর রেলস্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ছিল খুবই সরু ও বড় যানবাহন চলাচলের জন্য অনেকটাই অনুপযোগী। সেই ৮ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে প্রশস্তকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে নওগাঁ সড়ক বিভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় নওগাঁ সড়ক বিভাগাধীন ৩টি আঞ্চলিক ও ৩টি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সান্তাহার থেকে রাণীনগর রেলস্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ১৮ ফিট থেকে ৩৪ ফিট প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের জন্য ৬৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের ১৪ তারিখে কাজটির কার্যাদেশ প্রদানের মাধ্যমে সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পান মেসার্স জামিল ইকবাল লিমিটেড নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কাজের শুরুতে বিভিন্ন সমস্যার কারণে নির্মাণ কাজ একটু দেরিতে শুরু হলেও বর্তমানে সড়ক বিভাগের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে দ্রম্নতগতিতে নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। মালশন গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম বলেন, 'পুরো আঞ্চলিক মহাসড়কের সুবিধা পেতে হলে সান্তাহার-রাণীনগর পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণের কোনো বিকল্প ছিল না। অবশেষে সেই কাজ শুরু হয়ে দ্রম্নতগতিতে এগিয়ে চলেছে।' ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হাসান বলেন, 'আমরা প্রতিটি কাজ নির্ধারিত ডিজাইন অনুসারে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা মোতাবেক সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। যদি আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেয় এবং নতুন করে কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয় তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করে সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করতে সক্ষম হবো।' নওগাঁ সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নূরে আলম সিদ্দিক বলেন, 'এই অঞ্চলকে উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগামীর স্মার্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা বিনির্মাণে এবং পথচারীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে নওগাঁ সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে সড়ক নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছি। পূর্বের সরু সড়ক থেকে বৈদু্যতিক খুঁটি অপসারণ, টেলিফোন লাইনের পোল স্থানান্তর, সড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে দখল করে রাখা জায়গা উদ্ধার করতে গিয়ে কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধান করে আমরা নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছি।' নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক রাসেল বলেন, 'আমরা সড়কের নির্মাণ কাজ কঠোর নজরদারির মধ্যে রেখেছি। প্রতিটি কাজ প্রতিনিয়ত সড়ক বিভাগের লোক দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে যথাযথমান বজায় রেখেই আমরা সড়কের প্রতিটি কাজ বুঝে নিচ্ছি।'